ঢাকা ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পটুয়াখালীতে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় গিয়ে স্ত্রীর আত্মসমর্পণ

পটুয়াখালীতে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার পর থানায় গিয়ে স্ত্রীর আত্মসমর্পণ

পটুয়াখালী শহরের কলাতলা এলাকায় স্বামী রাকিবকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন স্ত্রী মিম আক্তার (১৯)।

শুক্রবার (১ মার্চ) বিকাল ৫টার দিকে পটুয়াখালী পৌরসভার কলাতলা আকন বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই নারীকে হেফাজতে নিয়েছে। পাশাপাশি লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতলের মর্গে পাঠিয়েছে।

মীম সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া গ্রামের মো. জুয়েলের কন্যা। রাকিব ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামের মো. নজরুল ইসলামের পুত্র। নজরুল ইসলাম ঔষধের হকারি পেশায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে পটুয়াখালী শহরে বসবাস করেন।

মিম পুলিশকে জানায়, প্রেমের বিয়ের পর থেকে স্বামীর বেকারত্বের কারণে দাম্পত্য কলহ লেগেই থাকতো। পারিবারিক অশান্তি, সারাক্ষণ মারপিট, ঘন ঘন বাবার বাড়ী পাঠিয়ে সেখানে গিয়েও নির্যাতনের মধ্যে শশুড় বাড়ীর লোকজন সুরক্ষা না দেয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে বটি দিয়ে কুপিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন মিম।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র, এলাকাবাসী ও রাকিবের পরিবার জানায়, মাত্র ছয় মাস আগে প্রেমের বিয়ে হয় মীম ও রাকিবের। বিয়ের পর পটুয়াখালী শহরের কলাতলা (৩য় লেন) আকন বাড়ী সড়কে রাকিবের বাবার ভাড়া বাসায় ওঠার পর থেকেই পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে রাকিবের মা বাসা ছেড়ে অন্য ছেলের বাসায় চলে যায়। মাদক ব্যবসা ও মাদকাসক্তিসহ নানা অভিযোগ ও গুঞ্জন আছে মীম রাকিবের বিরুদ্ধে। মীমের এর আগেও বিয়ে হয়েছিল, তার বাবা-মাকে নিয়েও আছে নানা গুঞ্জন অভিযোগ। আগের দিন ঝগড়া করে বাবার বাড়ী চলে গেলে শুক্রবার বিকেলে মীমকে নিয়ে বাসায় ফেরে রাকিব। রাকিব কে খুন করে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে মীম।

রাকিবের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আসরের সময় রাকিব ও মীম বাসায় আসছে। আমি আসরের নামাজ পড়তে গেছি। নামাজ পরে এসে দেখি তারা বাসায়। আমার ছোট ছেলে এসে বলে বড় ভাইয়ের (রাকিব) গলার মধ্যে কেমন যেন শব্দ করে। এ খবর শুনে আমি মীমদের ঘরে গেলে মীম জানায় রাকিব ঘুমাচ্ছে। এ কথা শুনে ফিরে আসি। পরে আমি মাগরিবের নামাজ পরে ফিরে আসার পর ছোট ছেলে জানায়, রাকিবকে মেরে ফেলছে।

শুক্রবার দূপুরে বাবা মারা যাওয়ার খবরে শনিবার সকালে তার মরদেহ দাফনে ভোলা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রাকিবের বাবা। এরই মধ্যে সন্ধায় ছেলে খুন হওয়ায় শোকে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নজরুল ইসলাম। একই দিনে পিতা-পুত্রকে হারিয়ে শোকে দিশেহারা নিহতের বাবা। রাকিবের বাবা নজরুল ইসলাম এ ঘটনায় মীমের ফাঁসি দাবি করেন।

পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আহমাদ মাঈনুল হাসান বলেন, ‘হত্যার বিষয়টি আশেপাশের লোকজন টের পায়নি। খুন হওয়া ব্যক্তির ছোট ভাই ঘটনাস্থলের একটু দূরে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তিনিও টের পাননি। কেন কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। খুনের স্বীকারোক্তি দিলেও এর পেছনে অন্য কারনও থাকতে পারে তাই মীমকে স্বীকারোক্তির জন্য আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনসহ এসব নানা বিষয়ে তদন্ত করবে পুলিশ।

পটুয়াখালী
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত