ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

কিশোরগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে নির্ধারিত মেয়াদেই : জেলা প্রশাসক

কিশোরগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে নির্ধারিত মেয়াদেই : জেলা প্রশাসক

চলতি বোরো মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলার হাওর অধ্যুষিত নয়টি উপজেলায় ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে নির্ধারিত সময়ে। এতে করে স্বস্তিতে রয়েছেন জেলার হাওরাঞ্চলের বোরো চাষিরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়িত এসব বাঁধের কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তদারকিতে থাকা জেলা প্রশাসক বলছেন, আগাম বন্যা থেকে হাওরাঞ্চলের কৃষকদের বোরো ফসল বাঁচাতে কার্যকরী ভুমিকা রাখবে এই বাঁধগুলো।

কিশোরগঞ্জ জেলার প্রায় দেড় হাজার বর্গকিলোমিটার হাওরাঞ্চলের দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে এখন সবুজের সমারোহ। হাওরের প্রধান ফসল বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।

২০১৭ সালে কিশোরগঞ্জের হাওর পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষণে পানির নিচে তলিয়ে যায় কৃষকের হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমির বোরো ধান। এরপর, ২০১৮ সাল থেকে হাওরের কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। চলতি বোরো মৌসুমে জেলার হাওর অধ্যুষিত নয়টি উপজেলায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪২ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামতের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করায় স্বস্তিতে হাওরাঞ্চলের কৃষক।

জেলার শতভাগ হাওর অধ্যুষিত ইটনা উপজেলার কুনিয়ার হাওরের কৃষক জামাল মিয়া বলেন, প্রতি বছর বোরোধান চাষ করে আমাদের একটাই ভয় থাকে পানিতে হাওর তলিয়ে যায়। আমাদের একটাই ফসল কাটতে পারিনা, খুব চিন্তায় থাকি। এই বাঁধ হওয়ার পর থেকে সুন্দর করে ফসল কাটতে পারি। এ বছর বাঁধ খুব মজবুত হয়েছে, তাই আমাদের চিন্তা নেই। সুন্দর মতে ফসল কাটতে পারবো।

এছাড়াও জেলার শতভাগ হাওর অধ্যুষিত মিঠামইন উপজেলার বড় হাওরের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, এই হাওরে আমি দুই কানি জমিতে বোরো ধান লাগিযেছি। ধানের গাছ খুব সুন্দর হয়েছে। এবার বাঁধ মজবুত হয়েছে, আগাম বন্যা হলেও পানি হাওরে ঢুকবেনা। নিশ্চিন্তে আছি, আল্লাহ রহমত করলে ধান কেটে বাঁধের উপর দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁধগুলোর মাটি ভরাট, ঘাস লাগানোর কাজ সম্পুর্ন শেষ। প্রতিটি নদী মোহনায় ঝুঁকিপুর্ন স্থান চিহ্নিত করে, আগাম উজানের ঢল থেকে ফসল রক্ষায় রাখা হয়েছে বাড়তি নজরদারি।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন "এ বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়েই সম্পন্ন করতে পেরেছি আমরা। অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং নদীর মোহনায় যেসকল বাঁধ রয়েছে, সেগুলো মেরামতে আমরা বাড়তি নজরদারি দিয়েছি। আশাকরছি আগাম বন্যা হলেও হাওরে পানি প্রবেশ করবেনা। কৃষকেরা নির্বিঘ্নে তাদের পাঁকা ধান ঘরে তোলতে পারবে এ মৌসুমে।"

নির্ধারিত মেয়াদে শেষ হওয়া এসব ফসল রক্ষা বাঁধের মেরামত কাজে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন,"মোট ১২৪ টি কমিটির কাজই আমরা নয়টি উপজেলায় তদারকি করেছি। আমি নিজে অনেকগুলো যায়গায় গিয়েছি। আমাদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ গিয়েছেন। গত বছরের তুলনায় এবার আরও দ্রুত কাজ শেষ হয়েছে। গতবারও আমরা নির্ধারিত মেয়াদের আগেই কাজ সম্পন্ন করেছিলাম। চলতি বছর যে উচ্চতায় বাঁধ নির্মাণ হয়েছে, আমরা আশা রাখছি আগাম বন্যা হলেও আমাদের বোরো ফসল ডুববেনা। ছোটখাটো মেরামত অতিরিক্তভাবে করা হয়েছে। আশাকরছি আমরা আগাম বন্যার হতে রক্ষা পাবো।"

চলতি মৌসুমে কিশোরগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হাওরেই আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর।

কিশোরগঞ্জ,ফসল রক্ষা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত