প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অনেক কিছুই বদলে গেছে। পা ভ্যান পরিণত হয়েছে হয়েছে ব্যাটারি চালিত ভ্যানে। কিন্তু অভাবের তাড়নায় আদম আলী ব্যাটারি কিনতে পারেননি। এ কারণে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন তিনি।
আদম আলীর বাড়ি সাদিপুর গ্রামে। পা ভ্যান ছিলো তার জীবীকার একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু এই ভ্যানে এখন আর কেউ উঠতে চায় না। সবার যে তাড়া তাড়াতাড়ি পৌঁছবার। এ কারণে ভরসা ব্যাটারি চালিত ভ্যান। কারণ পা ভ্যানের চেয়ে ব্যাটারি চালিত ভ্যান অনেক জোরে চলে। বহু বছর ধরে রিকশা ভ্যান চালিয়ে সংসারের খরচ যোগালেও এখন আর তা পারছেন না তিনি।
আদম আলী বলেন, কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। অর্থের অভাবে অটোরিকশা বা ভ্যানের ব্যাটারি কিনতে পারছি না। সন্তানরা সবাই নিজ নিজ পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে ভ্যান চালাই। যা আয় করি তা দিয়ে সংসার চলে না ব্যাটারি কিনবো কি দিয়ে?
তিনি আরও জানান, প্রায় ২০ বছর ধরে ভ্যান চালান তিনি। বাজারে আসা ট্রাকের মাল ভ্যানে করে নিয়ে দোকানে দোকানে পোঁছে দেন তিনি। সেটাও আবার প্রতিদিন নয়। সপ্তাহে দুদিন। শনিবার ও মঙ্গলবার। আয় হয় দুই থেকে তিনশো টাকা। এ দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয় তাকে।
ঈশ্বরদীতে ১০ থেকে ১২টি পা চালিত ভ্যান চলতে দেখা যায়। তাও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যারা চালাচ্ছেন তারা সবাই পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং বহু কষ্টে জীবনধারণ করছেন। পেশা বদলের কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়েই তারা এ পেশায় রয়েছেন। ফলে টুং টাং বেলের শব্দ আর পায়ের চাপে ছুটে চলা প্যাডেল ভ্যান এখন ঈশ্বরদী থেকে বিলুপ্তির পথে।
ব্যাটারিচালিত ভ্যানের যাত্রী গোপালপুর এলাকার ইসলাম আলী বলেন, এখন আর প্যাডেলচালিত রিকশা ভ্যান চোখে পড়ে না। আরেক যাত্রী জমেদ আলী বলেন, খুব ধীরগতির কারণে এই ভ্যান এখন আর কেউ পছন্দ করে না। দ্রুত যাতায়াতের জন্য ব্যাটারিচালিত ভ্যানে চড়েন। এতে সময় বাঁচে।
সমাজের বিত্তবান কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা আদম আলীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তারা।