অধ্যাপক প্রতিমা রাণীকে বহিষ্কারসহ ৫ দফা দাবীতে স্মারকলিপি

প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪, ১৯:১৮ | অনলাইন সংস্করণ

  দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জে হযরত মুহাম্মদ স: কে নিয়ে কটুক্তি ও ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় সহকারী অধ্যাপক ডা. প্রতিমা রাণীকে বহিষ্কারসহ ৫দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল ১১টায় মানিকগঞ্জের কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. জাকির হোসেনকে এ স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। 

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন ডা. প্রতিমা রাণী বিশ্বাস। যোগদানের পর থেকেই দাড়ি, টুপি, হিজাবসহ ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও কটুক্তি করে আসছিলেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার (১৩ মার্চ) গাইনী ক্লাশে হযরত মুহাম্মদ সঃ কে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও কটুক্তি করেন তিনি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তিতে বিষয়টি জানতে পেরে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও প্রতিবাদী হন। এরপর থেকেই মেডিকেল কলেজে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তারা বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরাও এর প্রতিবাদ জানান।

আজ সকালে শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা প্রিন্সিপালের সাথে বৈঠক করে ৫ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দেন। বৈঠকে দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা। এসময় আজকেই অস্থায়ীভাবে প্রতিমা রাণীকে ক্লাশ থেকে প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে সম্মতি জানান প্রিন্সিপাল।

এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা বলেন, আমরা আমাদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে জমা দিয়েছি। স্যার সময় চেয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিমা রাণীকে বহিষ্কারসহ ৫দফা দাবি বাস্তবায়িত না হলে সামনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সহকারী অধ্যাপক ডা. প্রতিমা রাণী ঘটনার পর থেকেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এ বিষয়ে তার মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।  

এ বিষয়ে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রতিমা রাণী ছুটিতে থেকে অন্যের ক্লাশে প্রক্সি দিতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী আজ থেকেই প্রতিমা রাণীকে ক্লাশ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সকল ধর্মের প্রতিই আমাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা রয়েছে। কেউ যেন ধর্মে আঘাত ও কটুক্তি করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা আরও সতর্ক থাকবো।

শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহঃ কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজ থেকে ডা. প্রতিমা রাণী বিশ্বাসকে অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে, এবং পরবর্তীতে যেন কোনো শিক্ষক কর্তৃক এহেন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, অনতিবিলম্বে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জনসম্মুখে (মিডিয়ার সামনে) ডাঃ প্রতিমা রাণী বিশ্বাসকে স্বীয় ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে।

পরিচয় শনাক্তকরণের নামে ভাইভা বোর্ড প্রভৃতি ক্ষেত্রে পুরুষ শিক্ষক কর্তৃক মুসলিম ছাত্রীদেরকে জোরপূর্বক নিকাব খুলে হয়রানি করা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য শিক্ষিকাদের দ্বারা আলাদা কক্ষে পরিচয় শনাক্তকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

মুসলিম ছাত্রদেরকে সুন্নতি দাড়ি ও পোশাক (টুপি-পাঞ্জাবি) নিয়ে কটূক্তি ও হয়রানি করা যাবে না।

সর্বোপরি পরবর্তীতে যেন যেকোন ধর্মের প্রতি কোনো প্রকার কটূক্তি তথা অবমাননা না করা হয়, তা নিশ্চিত করে কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।