পাহাড়ী জেলা রাঙামাটিতে গত কয়েকবছর যাবৎ তরমুজের বাম্পার ফলন হচ্ছে। সুস্বাদু এ তরমুজের চাহিদা সর্বত্রই ব্যাপক। অন্য বছরগুলোতে স্থানীয় বাজারে ন্যায্য মূল্যে পাওয়া গেলেও এবছরের চিত্র সম্পুর্ণ ভিন্ন। সময়ের আগে চলতি রমজানে বাজারে উঠেছে অপরিপক্ক তরমুজ। রঙে কিংবা স্বাদে গ্যারান্টি না থাকলেও সময় যত গড়াচ্ছে তরমুজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সরকারিভাবে তরমুজের দাম নির্ধারণ না থাকায় দোকানিরা নিজেদের মতো করে চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন এবং আদায় করে নিচ্ছেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে তরমুজ কিনে খাওয়া সাধ্যের বাইরে চলে গেছে নিন্ম-মধ্যবিত্তের। দাবি উঠেছে, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং জোরদার করার।
সোমবার (১৮ মার্চ) সরেজমিনে রাঙামাটি শহরের বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ও বিভিন্ন স্থানের ফুটপাতে অবৈধভাবে দখল করে ব্যবসায়ীরা তরমুজ সাজিয়ে রেখেছেন। এর মধ্যে দেশিয় তরমুজসহ বিভিন্ন দেশের জাতের তরমুজ সংখ্যাই বেশি। তবে অপরিপক্ক তরমুজের সংখ্যাই বেশি। দামও হাকাচ্ছেন আকাশচুম্বি।অভিযোগ রয়েছে, কেমিক্যালের মাধ্যমে পাকানোর পর বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
ছোট সাইজের একটি তরমুজ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার মাঝারি সাইজের প্রতি পিস ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের প্রতিটি তরমুজ ৫০০-৮০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দরে হাঁকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, রমজানের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে তরমুজের দাম ইচ্ছে মতো বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা বাজারে দ্বিগুন দাম চাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দুই এক দিন আগে মাঝারি সাইজের একটি তরমুজ সর্বোচ্চ ২০০ টাকা চাচ্ছিলেন বিক্রেতারা। তবে এখন সেই সাইজের তরমুজ দ্বিগুন দমে বিক্রি করা শুরু করেছেন তারা। অনেক সময় এর চেয়েও বেশি দামে চাচ্ছেন। প্রতি বছর এটা নিয়ে অভিযান চলে। তারপরও কোনো পরিবর্তন হয় না। ক্রেতারা জানান, বাজারে ওঠা বেশির ভাগ তরমুজ অপরিপক্ব হলেও চাহিদা কম নয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় যোগান কম। এছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে বাড়তি দাম দিয়ে তরমুজ কিনতে হচ্ছে তাদের। তার সাথে যুক্ত হচ্ছে বাড়তি গাড়ি ভাড়া। যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। আকার ও মানভেদে প্রতি কেজি তরমুজ ৬০ থেকে ৮০ টাকা হিসাব করে দাম রাখা হচ্ছে। আরও সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পরিপক্ব তরমুজ ওঠবে বলে জানান বিক্রেতারা। তখন দামও কমবে আবার আকারও বড় হবে।
ক্যাব রাঙামাটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান মহসীন রানা জানান, বাজার নিয়ন্ত্রনে সরকারের আন্তরিকতার কোন অভাব নেই। পাহাড়ী পণ্য হিসেবে তরমুজ ন্যায্য মুল্যে পাওয়ার কথা থাকলেও বেশি লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চড়া দামে তরমুজ বিক্রি করছে, এটা দুঃখজনক। এ বিষয়ে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে।