গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, পরিকল্পিত কক্সবাজার বিনির্মাণে সমন্বয়ে এগুনোর বিকল্প নেই। পূর্ত মন্ত্রী হিসেবে আমার প্রধানকাজ সবার মাঝে সমন্বয় নিশ্চিত করে সরকারের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা। গুছিয়ে কাজ করতে হলে, সমস্যা চিহ্নিত করা জরুরী-আমরা সেটাও করছি।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক), জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ- কক্সবাজার, গণপূর্ত জোন, কক্সবাজার নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপ কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার সফর বলতে পারেন আমাদের রুটিন ওয়ার্ক। আমি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বে আসার পর সচিব ও অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে বিভিন্ন জেলা এবং বিভাগে ফর করছি। এ নিয়ে তিনটি জেলায় যাওয়া হয়েছে, যেখানে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আছে। এখানে (কক্সবাজার) অবশ্য সিটি কর্পোরেশন নেই, মিউনিসিপিউলি (পৌরসভা) আছে। আমাদের হাতে যে কাজগুলো আছে, সেগুলো যাতে সুচারুরূপে সম্পন্ন হয় সেটা বলার জন্যই আসি। এসব করতে গিয়ে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সির সাথে সমন্বয় যেন থাকে, যাতে কোন এজেন্সির দ্বারা অন্যকোন এজেন্সির কাজ বাধাগ্রস্থ যেন না হয়। সেটা দেখাও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব- তাই করতে এসে, একাধিক এজেন্সির জেলা ও বিভাগীয় প্রধানদের সাথে বসেছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যে বিশাল আকারের চিন্তাভাবনা নিয়ে সামনে এগুচ্ছে তাকে আমরা এপ্রোসিয়েট করি। মনে করছি যে, কউকের এ উদ্যোগ সময়োযোগী। গণপূর্ত বিভাগও বেশকিছু প্রকল্প চলমান রেখেছে, যা সুচারুরূপে বাস্তবায়ন করছে বলে প্রতিয়মান হলো। মন্ত্রণালয়ের অন্য যে এজেন্সি রয়েছে সবার সাথে কথা হয়েছে, তাদের সমস্যা ও পরিকল্পনা এবং চলমান কাজ সম্পর্কে জেনেছি। সমস্যা সমাধান করেতে হলে, সমস্যা চিহ্নিত করা জরুরী। আমরা সেটাও করছি।
কক্সবাজার যাতে ভবিষ্যতে সুন্দর ও বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি নিশ্চিত করতে পারে তার জন্য আমরা পরিকল্পিত উন্নয়নে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তা নিশ্চিত করতে সরকারের অন্য বিভাগ যেমন, পর্যটন, বন ও পরিবেশ এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সকলের সাথে সম্মিলিত ভাবে কক্সবাজারকে একটা উন্নত, সমৃদ্ধ অঞ্চল তথা পর্যটকদের আকর্ষনীয় বিশ্বমানের স্থান হিসেবে গড়তে আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
কউকের প্রতিষ্ঠিত অনেক প্রকল্প অবহেলায় পড়ে সৌন্দর্য্য হারাচ্ছে- এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা দেখভালে অর্থসংকট রয়েছে কি না প্রশ্নের জবাবে পূর্তমন্ত্রী বলেন, অর্থ সংকট থাকার কথা নয়- এমনটি হয়ে থাকলে কউকের সাথে অন্য এজেন্সির সমন্বয়ের অভাব থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন এমপি। পর্যটন নগরীর সৌন্দর্য্য বর্ধনে সম্পাদন হওয়া প্রকল্পগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিতে কউকসহ সকলকে সচেতন হবার পরামর্শ দেন মন্ত্রী।
এর আগে, কউক সম্মেলন কক্ষে কউক চেয়ারম্যান কমডোর মোহাম্মদ নুরুল আবছারের সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন এজেন্সি তাদের চলমান কাজগুলো মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে তুলে ধরেন। এখানে গণপূর্ত বিভাগ বাস্তবায়িত কক্সবাজারে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ কমপ্লেক্স, কউকের ফ্ল্যাট প্রকল্পসহ চলমান এবং ভবিষত একাধিক প্রকল্প সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়।
এসময় চট্টগ্রাম বন্দর এলাকার সংসদ সদস্য এমএ লতিফ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, কউক সচিব মো. আবুল হাসেম, গণপূর্তের কক্সবাজারের নির্বাহি প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহজাহান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কউকের সভা শেষে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সংসদ সদস্যগণ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, কক্সবাজার পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে পৃথক বৈঠক করেছেন মন্ত্রী। শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে মন্ত্রী মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে চলমান নানা প্রকল্প পরিদর্শনে যাবেন বলে উল্লেখ করেছেন মন্ত্রীর একান্ত সচিব এ এস এম হুমায়ুন কবীর।