ঈদের আগে মুক্তি মিলতে পারে জিম্মি নাবিকদের

প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪, ১৫:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম

সোমালিয়া উপকূলে জলদস্যুদের হাতে বাংলাদেশী নাবিকদের জিম্মিদশার প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চলেছে। দস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ 'এমভি আব্দুল্লাহ' ও ২৩ নাবিককে নিরাপদে ফেরাতে জোর পদক্ষেপ চালাচ্ছে মালিকপক্ষ। 'এমভি আবদুল্লাহ'র মুক্তির বিষয়ে দস্যুদের সাথে আলোচনা চলমান রয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। এই সমঝোতার অপেক্ষায় রয়েছে জিম্মি নাবিকদের পরিবার। এদিকে জিম্মি নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত করতে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে আসন্ন ঈদের আগেই জাহাজসহ নাবিকদের মুক্তির জোর প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে জাহাজের মালিক পক্ষ।

এমভি আবদুল্লাহ মুক্তির সর্বশেষ তথ্য জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, জিম্মি নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত করার লক্ষ্যে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। ঈদের আগেই যত দ্রুত সম্ভব নাবিকদের ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।এদিকে আবদুল্লাহতে মজুদ খাবার পানি ফুরিয়ে আসছে। ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি মজুদ ছিল জাহাজে। ইতোমধ্যে নাবিকদের রেশনিং করে পানি সরবরাহের ধাপটি শুরু হয়েছে। জাহাজে পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে, তবে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এখন আবদুল্লাহ জাহাজে পানি রেশনিং করা হচ্ছে। নাবিকদের খাবার নিয়ে আশা করি সমস্যা হবে না। কারণ জাহাজে মজুদ খাবার ফুরিয়ে এলে জলদস্যুরা নাবিকদের খাবার সরবরাহ করে থাকে। পানি সংকটের বিষয়ে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকের পরিবারের সদস্যরাও একই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে নাবিকদের জন্য প্রায় ২৫ দিনের হিমায়িত খাবার মজুদ ছিল। তবে শুকনো খাবার অনেক দিনের জন্য মজুদ রয়েছে। এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করার সময় জাহাজটিতে ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি ছিল। মুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আনাম চৌধুরী জানান, যদি জাহাজ মালিকপক্ষ, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জলদস্যু পক্ষের (তৃতীয় পক্ষ) আলোচনা চূড়ান্ত হয় তখনই কেবল জাহাজটি কাছের কোনো বন্দরে যেতে পারবে। মেরিটাইম বিশ্বের অনুশীলন হচ্ছে সেক্ষেত্রে জাহাজটির বর্তমান নাবিকদের প্লেনে নিজ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কারণ তারা শারীরিকভাবে ফিট থাকলেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে। অন্যদিকে জাহাজ মালিক পক্ষ আরেকটি টিম পাঠাবে জাহাজটি পরবর্তী বন্দরে পণ্য খালাসের জন্য। সব কিছু হয় বোঝাপড়ার মাধ্যমে প্রয়োজন অনুযায়ী। এক্ষেত্রে আমরা আশাবাদী এমভি আবদুল্লাহর জিম্মি নাবিকরা যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে আসবেন।

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) আমাদের সঙ্গে এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা সবাই ভালো আছেন। জলদস্যুরা মঙ্গলবারের দিকে নিজেরা খাবার জন্য স্থানীয়ভাবে কিছু ভেড়ার (দুম্বা/ছাগল) মাংস সংগ্রহ করেছে। এক্ষেত্রে তারা নাবিকদেরও কিছু খেতে দিয়েছে। এর কারণ হচ্ছে জাহাজের খাবারের মজুদ শেষ হলে জলদস্যুদের সরবরাহ করা খাবারই খেতে হবে নাবিকদের। এর জন্য অভ্যস্ত হতে হবে। কারণ জলদস্যুদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য হলেও নাবিকদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেওয়ার আগে এটির নাম ছিল গোল্ডেন হক। মালিকানা পরিবর্তনের পর জাহাজের নামও পরিবর্তন করা হয়। নতুন নাম এমভি আবদুল্লাহ।গত ১২ মার্চ মঙ্গলবার ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। চট্টগ্রামের অন্যতম শিল্পগ্রুপ কেএসআরএম এর মালিকানাধীন জাহাজটি বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে আছে।