দেশের বৃহত্তম ও একমাত্র কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন গত কয়েকদিনে সর্বনিন্মে নেমে এসেছে। কাপ্তাই হ্রদে অস্বাভাবিক হারে পানি কমে যাওয়ার কারণে ২৫০ মেগাওয়াটের উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এখন দৈনিক গড়ে উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট। সংশ্লিষ্টদের অভিমত, ঠিকমত ভারী বৃষ্টি না হলে এবং কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিং এর উদ্যোগ না নিলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।
জানা গেছে, চলতি বছর শুস্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে আসায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে মাত্র ১টি ইউনিট সচল রয়েছে। যা থেকে মাত্র বর্তমানে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। বাকী ৪টি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের ভরা মৌসুমে পাঁচটি ইউনিট থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পানি রয়েছে ৮০ ফুট এমএসএল। যেখানে মার্চ মাসে পানি থাকার কথা ৮৯ ফুট এমএসএল। অনাবৃষ্টি, বন উজার হওয়া, কাপ্তাই হ্রদে নব্যতা সংকটের কারণে পানি তলানীতে চলে যাওয়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের এই বিপর্যয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য ও কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সদস্য মোঃ মনিরুজ্জামান মহসীন রানা জানান, নির্দিষ্ট সময়ের আগে কাপ্তাই হ্রদে পানি কমে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়া কোন ভালো খবর নয়। পাহাড়ের বন উজার হওয়া, নতুন বনায়নের উদ্যোগ না নেওয়া এবং গত কয়েকবছর ধরে অনাবৃষ্টির কারণে পাহাড়ের জলাধার শুকিয়ে যাচ্ছে এবং কাপ্তাই হ্রদ নব্যতা হারাচ্ছে। যার ফলে কাপ্তাই হ্রদের ওপর নির্ভর পাহাড়ের অর্থনীতি মারাত্বক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। তাই দক্ষিন এশিয়ার বৃহত্তম এই কাপ্তাই হ্রদকে বাঁচাতে হলে অনতিবিলম্বে ড্রেজিং করা খুবই জরুরী বলে তিনি মনে করেন।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদে অস্বাভাবিক হারে পানি কমে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে মাত্র একটি ইউনিট সচল রয়েছে। যার ফলে পাঁচটি ইউনিট যেখানে থেকে গড়ে প্রতিদিন ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন হতো, সেখানে একটি ইউনিট থেকে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। সময়মত ভারী বৃষ্টি না হলে এবং কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি না হলে এ সমস্যা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।