কৃষককে অফিস থেকে বের করে দেওয়ায় দুই কর্মকর্তাকে বদলি
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার কৃষক ফজলুর রহমানকে কৃষি অফিস থেকে বের করে দেয়ার ঘটনায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন সুজনক ও উপজেলা কৃষি অফিসার রাজিয়া তরফদারকে বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রবিআহ নূর আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অফিস আদেশ কপি থেকে জানা যায়, মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার কৃষি অফিসের উপ-সহকারী মো. সালাহউদ্দিন সুজনকে দিনাজপুর অঞ্চলের অধীনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছে। আগামী ৩ এপ্রিলের মধ্য তিনি দায়িত্বভার হস্তান্তর করবেন, অন্যথায় ৪ এপ্রিল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিস) বলে গন্য করা হবে।
এ ঘটনায় শিবালয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদারকেও ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। ওই অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আগমাী ১৬ এপ্রিল তিনি তার দায়িত্বভার হস্তান্তর করবেন। অন্যথায় ১৭ এপ্রিল থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্তি বলে গন্য হবে।
গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) জেলার শিবালয় উপজেলা কৃষি অফিসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এক গুচ্ছ ধান নিয়ে পরামর্শ নিতে যান। কৃষি অফিসে দায়িত্বরত কৃষি কর্মকর্তা ওই কৃষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা এবং কৃষকে কৃষি অফিস থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ঢাকামেইল’সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। পরে তাদের নির্দেশে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মো. শদিুল আমিন এবং অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) মো. মামুন ইয়াকুবকে নিয়ে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রবিআহ নূর আহমেদ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে শিবালয় উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দিনাজপুরে বদলি করা হয়েছে। এবং আজকের তারিখের আরেকটি অফিস আদেশে উপজেলা কৃষি অফিসার রাজিয়া তরফদারকেও ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বদলি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বোরো খেতে পোকার আক্রমণ হওয়ায় গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের গহেরপুর গ্রামের কৃষক ফজুলুর রহমান পরামর্শের জন্য এক গুচ্ছ ধান হাতে নিয়ে কৃষি অফিসে যান। এ সময় তিনি ধানগুলোর ছবি তোলার কথা বলেন এবং জেলার উপ-পরিচালকের ফোন নাম্বর চান। একই সঙ্গে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে যান না বলে অভিযোগ করলে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন সুজন।
পরে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওই কৃষককে বলেন, ‘আমি কি আপনার কামলা দেই। আপনি কি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেছেন। আপনি বললেই মাঠে যেতে হবে। যা পারেন করেন গা। আপনি বেরিয়ে যান। যদি বয়স্ক লোক না হতেন তাহলে আপনাকে দেখে নিতাম। এক পর্যায়ে তাকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী কৃষক এ ঘটনাটি সাংবাদিকদের জানান। পরে কৃষককে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার রাজিয়া তরফদারের কাছে জান সাংবাদিকরা। সেখানে সবার সামনেই আবারও কৃষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ওই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা। সাংবাদিকরা এর প্রতিবাদ করলে কৃষকের ওপরেই দোষ চাপিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন উপজেলা কৃষি অফিসার রাজিয়া তরফদার।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফয়েজ উদ্দীনের সহধর্মিনী একই জেলার শিবালয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া তরফদার।