অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া সেলিম প্রধান ওরফে ডন সেলিম দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মামলাগুলোকে ষড়যন্ত্রমূলক দাবী করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এসময় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে অভিযোগ করেন একটি বাহিনীর সাবেক প্রধান কর্মকর্তার দুই ভাই (হারিছ আহমেদ ও জোসেফ আহমেদ) পরিকল্পিতভাবে আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। অনলাইন ক্যাসিনো কিংবা কোন ধরনের ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই বলেও তিনি দাবি করেন।
শনিবার ২০ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনে সিনামন রেষ্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি। রূপগঞ্জ ওয়ান ফ্যামিলির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে তার সাথে উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী সন্তান এবং দুজন আইনজীবী।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিম প্রধান দাবি করেন, আমি সেলিম প্রধান নারায়ণগঞ্জের সন্তান। ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। একটি বাহিনীর সাবেক প্রধান কর্মকর্তার দুই ভাই (হারিছ আহমেদ ও জোসেফ আহমেদ) পরিকল্পিতভাবে আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়া আল জাজিরায় তাদের নিয়ে ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে হারিছ স্পষ্ট করে বলেছে, আমাকে কিভাবে ফাঁসানো হয়েছে, কিভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে র্যাব দিয়ে আমাকে প্লেন থেকে আটক করা হয়েছে। অথচ এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন অতিক্রম করার মানে হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আইনি কোন মামলা বা জটিলতা নেই। তারপরও আমাকে প্লেন থেকে গ্রেফতার করে পরিকল্পিতভাবে নাটক সাজিয়ে গ্রেফতার করেছে। আমার বিরুদ্ধে অর্থ পাঁচারের অভিযোগ তোলা হয়। এরপর ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে চার বছর একদিন জেল খাটিয়েছে। আমি ওই ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার চাই। আমি জেল থেকে বের হয়ে এই ষড়যন্ত্রের কথা গণমাধ্যমে বলে এসেছি। এমনকি জেলে আটক থাকা অবস্থায়ও বলেছি। তারপরও আমার নিরপরাধ হওয়ার নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। এসব সম্পন্ন করে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।
ভিডিও প্রদর্শনের পরে সেলিম প্রধান বলেন, ‘হারিস, জোসেফদের সাথে আমি মোহাম্মদপুরে বড় হয়েছি। মূলত আমার প্রতি তাদের জেলাসি ছিলো। সেই জেলাসি থেকে আমাকে বিমান থেকে নামিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এরপর কেবল অনলাইন ক্যাসিনো, ক্যাসিনো ডন ইত্যাদি আখ্যা দেয়া হয়েছে। অথচ এসবের সম্পর্কে আমার কোন ধারনাই নেই। আমি চার বছর একদিন পর ফিরেছি। আমি কোন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত নেই। যেটা সত্য সেটা প্রমাণ হবেই।’ তিনি নিজেকে জাপান বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পেপারস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ী হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন সেলিম প্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে তার বর্তমান দাবী কি এমন প্রশ্নে বলেন, ‘যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে চার বছর একদিন জেল খাটিয়েছে। আমাকে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের কাছ থেকে দূরে রেখেছে। আমাকে সামাজিকভাবে হেনস্থা করেছে। সেই ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার চাই। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাহিনীগুলোর দপ্তরে বিভাগীয় তদন্তের জন্যেও অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানান। এছাড়া উপজেলা পরিষদে নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তীতে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরবেন।
উল্লেখ্য ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে থাই এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে ব্যাংকক যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র্যাব।