দীর্ঘ এক মাসেরও বেশী সময় ধরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মিদশায় বন্দী থাকা বাংলাদেশী জাহাজ ‘এমভি আব্দুল্লাহ’ ও ২৩ নাবিকের সম্প্রতি মুক্তি
সোমালিয়ার উপকূল থেকে মুক্ত হওয়ার ৯ দিনের মাথায় তীরের দেখা পেলেন জাহাজটির ২৩ নাবিক। সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহাজটিকে বহির্নোঙ্গর থেকে জেটিতে বার্থিং দেওয়া হয়।
এর আগে রোববার বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে চারটার দিকে এটি হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙ্গর করেছিল। এদিকে জেটিতে ভিড়তে পেরে নাবিকরা উল্লাস প্রকাশ করেছেন। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাসের প্রস্তুতি চলছিল। পণ্য খালাস শেষ হতে আরও ৬-৭ দিন লাগতে পারে। এরপরই জাহাজটির বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে দুবাই বন্দর ত্যাগের কথা রয়েছে। এমভি আবদুল্লাহ চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন।
প্রতিষ্ঠানটির সিইও মেহেরুল করিম জানান, জাহাজ জেটিতে ভিড়েছে। আমরা নাবিকদের সবার সঙ্গে কথা বলছি। তারা সুস্থ আছেন। একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতি কাটিয়ে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরে সবাই খুশি, তারা আনন্দ প্রকাশ করছেন।
তিনি জানান, নাবিকদের কেউ শোর পাস নিয়ে দুবাইয়ে ঘুরতে বা মার্কেটিং করতে চাইলে, সেটি করতে পারবেন। জাহাজের ২৩ নাবিকের মধ্যে ২১ জনই এই জাহাজে করে দেশে ফিরবেন। দুইজন দুবাই থেকে ফ্লাইটে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের ফ্লাইটে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। নাবিকদের সবাই বাংলাদেশি।
জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত জানান, বাংলাদেশ সময় সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে আল-হামরিয়া বন্দরের জেটিতে জাহাজটি ভেড়ানো হয়েছে। জাহাজটি ভেড়ানোর সময় বন্দর জেটিতে আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কেএসআরএম গ্রুপের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে বাল্ক ক্যারিয়ার এমভি আবদুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে যাচ্ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে এটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জলদস্যুরা জোর করে অস্ত্রের মুখে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায়। ৩২ দিন পর গত ১৪ এপ্রিল সোমলি দস্যুরা জাহাজ ও এর ২৩ নাবিককে মুক্তি দেয়। প্রায় ৩৩ দিনের জিম্মিদশার পর ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত হয়। এরপরই জাহাজটি ১ হাজার ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকা আরব আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। ৯ দিনের মাথায় এই দূরত্ব অতিক্রম করে জাহাজটি আমিরাতের আল-হামরিয়া বন্দরে পৌঁছল।