দিনাজপুরে তাপপ্রবাহে ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি, দুশ্চিন্তায় চাষিরা
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:০৫ | অনলাইন সংস্করণ
বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
বিরলে ছোট-বড় মিলিয়ে লিচু বাগানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। চলতি বছরে দিনাজপুরে মৌসুমের শুরুতে চমৎকার ও উপযোগী আবহাওয়া থাকায় লিচু বাগান গুলোতে এবার ব্যাপক মুকুলের সমারোহ ঘটে। চৈত্র মাসের শেষদিকে গাছগুলোতে গুটি আসতে শুরু করে। কিন্তু বৈশাখের শুরু থেকে অব্যাহত দাবদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে পুড়ে যাচ্ছে গাছের মুকুল, ঝড়ে পড়ছে নতুন গুটি, শুকিয়ে যাচ্ছে গুটির বোটা। এতে করে প্রথম অবস্থায় গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ দেখে বেশ আশান্বিত হলেও এখন লিচুর ফলন নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দিনাজপুরের চাষিরা।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দিনাজপুরে লিচু চাষে জমির পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ৪৮৯ হেক্টর। জেলায় লিচু বাগানের সংখ্যা চার হাজারের বেশি। ১৩ উপজেলায় লিচু চাষ হলেও সদর ও বিরল উপজেলার লিচুর চাহিদা বেশি। সবচেয়ে বেশি লিচু আবাদও হয় বিরল উপজেলায়। শুধুমাত্র বিরল উপজেলাতেই আড়াই হেক্টরের বেশি জমিতে লিচুর আবাদ করা হয়।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। আবহাওয়া বিবেচনায় কোনো অবস্থাতেই দিনের বেলায় তাপমাত্রা বেশি থাকা অবস্থায় গাছে পানি দেওয়া বা স্প্রে করা যাবে না। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা কমে গেলে গাছে স্প্রে করে পানি ছিটাতে হবে, কীটনাশক দিতে হবে। সেই সঙ্গে গাছে কিছু অনুখাদ্য দিলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
জেলার সদর উপজেলার মাসিমপুরসহ বিরল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা লিচু রক্ষায় বাগানে সেচ ও গাছের পরিচর্যা করছেন। কেউ কেউ লিচু রক্ষার জন্য গাছে কীটনাশক, বিভিন্ন অনুখাদ্য প্রয়োগ করছেন।
দিনাজপুর সদর উপজেলার মাসিমপুর গ্রামের লিচুচাষীরা জানান, প্রথম অবস্থায় আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রায় প্রতিটি গাছেই ব্যাপক মুকুল আসায় এবার লিচু নিয়ে তারা বেশ আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু গুটি আসা শুরু হওয়ার পর দাবদাহ আর গরমের কারণে পুড়ে গেছে গাছের অনেক মুকুল এবং এখন ঝড়ে পড়ছে লিচুর গুটি।
এ অবস্থায় ফলন নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলেন, লিচুগাছে এবার প্রচুর মুকুল আসার পরও বৈরী আবহাওয়ার কারণে গুটি ঝড়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ফলন অর্ধেকে নেমে যেতে পারে। তবে পরিস্তিতি মোকাবেলায় আমরা কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে । তারা যদি পরামর্শ মেনে সঠিকভাবে সেচ দেয়, ওষুধ প্রয়োগ করে তাহলে এই লিচুকে আমরা হারভেস্ট পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারব এবং পর্যাপ্ত ফলন পাব।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন থেকে দিনাজপুরে মৃদু ও মাঝারি দাবদাহ বিরাজ করছে। খুব শীঘ্রই এ থেকে উত্তরণের কোনো সম্ভাবনা নেই।