ফের বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে  সীমান্ত, আতঙ্ক

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৪, ১৯:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষের ব্যাপকতা কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর ফের বেড়েছে। থেমে থেমে গোলাগুলি চলছে। আর বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে বাংলাদেশ সীমান্ত। এ অবস্থায় কক্সবাজারে টেকনাফসহ সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাইট্যং পাড়া থেকে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ এলাকা পর্যন্ত নাফ নদের বিভিন্ন সীমান্তে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসতে শুনেছেন। এখনও মাঝেমধ্যে বিস্ফোরণে শব্দ শোনা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, ‘সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সাবরাং ইউনিয়নের আছারবনিয়া, ডেগিল্যারবিল, নয়াপাড়া ও শাহপরীরদ্বীপসহ কয়েকটি এলাকা সীমান্তে নাফ নদের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসতে শোনা গেছে। মাঝেমধ্যে ভারী গোলাবর্ষণের বিকট শব্দে কেঁপে উঠছে এপারের সীমান্তের জনবসতিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মিয়ানমার থেকে ভেসে আসা পর পর কয়েকটি ভারী গোলাবর্ষণের বিকট শব্দে শাহপরীরদ্বীপ সীমান্ত কেঁপে উঠলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়। এ সময় নাফ নদের পাড়ে থাকা অনেককে সরে এসে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।’

স্থানীয় এ ইউপি চেয়ারম্যান জানান, কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের উত্তরে সুধাপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় আরাকান আর্মি ও দেশটির সরকারি বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। সেখানকার দখল-বেদখলের জেরে সংঘর্ষের কারণে বিস্ফোরণের বিকট এসব শব্দ ভেসে আসছে।

তবে নাফ নদ সীমান্তের অন্তত ৩ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে মিয়ানমার অভ্যন্তরে চলমান এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ছোড়া কোনো গোলাবারুদ এপারে আসেনি বলেও জানান নুর হোসেন।

টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ মুজিবুর রহমান বলেন, সোমবার রাত থেকে টেকনাফ পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের নাইট্যংপাড়া, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া, কুলালপাড়া, নাজিরপাড়া, পল্লানপাড়া, কাঁয়ুকখালী পাড়া ও অলিয়াবাদসহ কয়েকটি এলাকায় থেমে থেমে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ ভেসে আসছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। 

তিনি আরও বলেন, ‘বিস্ফোরণের বিকট শব্দে সীমান্তে বসবাসকারী বাসিন্দাদের বসত ঘরে কেঁপে ওঠে। আতঙ্কে রাত কাটিয়েছেন তারা। এখনও বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসা অব্যাহত থাকায় স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটানিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ বিষয়। অনুপ্রবেশসহ সীমান্তে উদ্ভূদ যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে উদ্ভূদ পরিস্থিতি সম্পর্কে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডসহ সংশ্লিষ্টরা সজাগ রয়েছে। তবে যেকোনো পরিস্থিতিতে যেন কোনোভাবে অনুপ্রবেশের ঘটনা না এ ব্যাপারে সীমান্ত সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।