চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় এক প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। প্রবাসী ইউসুফের মা ও তার ছেলেকে বাড়ির ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করেছে ডাকাত দল। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় আরেক শিশুকে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়।
সোমবার (২৭ মে) দিনগত রাতে উপজেলার ২নং বাকিলা ইউনিয়ন পশ্চিম রাধাসার বকাউল বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-বকাউল বাড়ির প্রবাসী ইউসুফের ছেলে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত (১২), তার দাদি হামিদা (৭০)।
এ ঘটনায় ইউসুফের মেয়ে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী হালিমাকে (১৪) কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে ডাকাতের দল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান চিকিৎসক।
ওই গ্রামের খান বাড়ীর বাবলু জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে নিহত আরাফাতের মা শাহিন আমাকে ফোন করে তাদের বাড়ীতে ডাকাত ডুকছে, অনেককে কুপিয়েছে বলে ফোন করে। পরে স্থানীয় মসজিদের মাইকে বকাউল বাড়ীর ডাকাত ডুকেছে বলে প্রচার করা হয়। পরে আমিসহ কয়েকজন ওই বাড়ীতে যাই। গিয়ে দেখি প্রবাসি ইউসুফের মায়ের মৃতদেহ খাটের উপর পড়ে আছে। তার ছেলে আরাফাত ও মেয়ে হালিমা নিচে আহত অবস্থায় নিচে পড়ে আছে। তাদের শরীর থেকে রক্ত যাচ্ছে।
এরপর স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও অন্যদের সহযোগিতায় আহতদের কাঁধে করে রাস্তায় এনে পাশের বাড়ী থেকে অটো নিয়ে হাসপাতালে আসি। আসার পথেই আরাফাত মারা যায়। হাসপাতাল থেকে আরাফাতের বোন হালিমাকে কুমিল্লায় রেফার করা হয়। শুনেছি সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে। তার পিঠে ও বুকে কোপ দেয়া হয়েছে।
অটো রিকশা চালক জহির জানান, রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। আনুমানিক সাড়ে ১২টার পরে আমার বাড়ীতে আহত আরাফাত ও তার বোন হালিমাকে নিয়ে আসে স্থানীয়রা। পরে আমার ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা করে তাদেরকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।
একই বাড়ীর সাহাবুদ্দিন জানান, ডাকাতির ঘটনায় ফোন পেয়ে আমরা ওই বাড়ীতে যাই। আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা জানান, তার ঘরের তালা ভেঙে তার ঘরেও ডাকাত দল প্রবেশ করেছে। সে অন্য একটি রুমের দরজা আটকিয়ে বিভিন্ন জনকে ফোন করে বাড়ীতে ডাকাতি হচ্ছে বলে জানাচ্ছিল। ডাকাত দল কালো বোরকা পড়া ছিলো।
স্থানীয়রা জানান, বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও ৩টি বিল্ডিং রেখে কেন ডাকাত দল টিনের ঘরে ডুকলো ? ডাকাত দল ডাকাতির উদ্দেশ্য ওই ঘরে প্রবেশ করলে, ঘর থেকে কোন স্বর্ণালংকার খোয়া যায়নি। এমনকি নিহত বৃদ্ধ মহিলা হামিদা বেগমের গলায়ও স্বর্ণের চেইন ও কানে স্বর্ণের দুল আছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টিতে ডাকাতির খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।