জমি দখল, হামলা ও ভাংচুরসহ অন্যান্য ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো: আনিছুর রহমান পাঠানকে (৬২) ১৫মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।
একই মামলায় আরো চার ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে নেত্রকোণার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-২ এর বিজ্ঞ বিচারক রিমি সাহা এই আদেশ দেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট পিযুষ কুমার সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় দন্ডাদেশ প্রাপ্ত অপর আসামিদের মধ্যে চেয়ারম্যানের ছেলে হৃদয় পাঠানকে (২৮) দেড় বছর, ভাতিজা সাইদুল পাঠানকে (৩২) দেড় বছর, জিল্লুর পাঠানকে (৩৪) পনের মাস ও চাচাতো ভাই মাসুম পাঠানকে (৪০) তিন মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি মাসুম পাঠান ব্যতিত অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এডভোকেট পিযুষ কুমার সাহা, স্থানীয় বাসিন্দা ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ৫১৬ ও ৫১৭ দাগের ৪৬ শতক জায়গা নিয়ে আনিসুর রহমান পাঠানের সঙ্গে রংছাতি গ্রামের বাসিন্দা খুশিকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস আলীর মধ্যে বিরোধ ছিল। ওই জায়গাটি ইউনিয়ন পরিষদের বলে দাবি করেন আনিছুর রহমান পাঠান। আর ইউনুস আলীর দাবি তিনি ক্রয়সূত্রে জায়গাটির মালিক। জায়গা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনুস আলীর মধ্যে আদালতে মামলা চলমান আছে। তবে ইউনুস আলীর দখলে থাকায় আদালত মামলার স্থিতাবস্থা জারি করেন। ইউনুস আলী জায়গাটিতে দুটি ঘর তৈরি করে বসবাস করে আসছিলেন।
গত ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর আনিসুর রহমান পাঠান তার লোকজন নিয়ে ইউনুস আলীর বাড়িতে হামলা চালান এবং ঘর ভাঙচুর, লুটপাটসহ মারধর করেন। এই ঘটনায় ইউনুস আলী, তাঁর চাচাতো ভাই মামুনুর রশিদ ও আতাউর রহমান আহত হন। ঘটনার পর ইউনুস আলীর স্ত্রী আসমা আক্তার বাদী হয়ে আনিছুর রহমান পাঠানসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন।
ইতোমধ্যে একজন মারা যাওয়ায় আদালত পাঁচ আসামির বিচার ও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করা হয়।
ইউনুস আলী বলেন, জায়গাটি দীর্ঘদিন আগে সাফ কাওলা দলিল মুলে আমি একজনের কাছ থেকে ক্রয় করি। আমার ভোগদখলে থাকা জায়গা দখল করতে চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন নিয়ে হামলা, লুটপাট, ঘরভাঙচুরসহ আমাদের জখম করেন। আদালতের রায়ে আমরা সুবিচার পেয়েছি।
চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পাঠানের আইনজীবী নুরুল ইসলাম বলেন, এ রায়ে আমার মক্কেল সুবিচার পাননি। আমরা আপিল করবো।
নেত্রকোণা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জাফর ইকবাল বলেন, আদালতের নির্দেশে চেয়ারম্যানসহ চার আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।