মৃত্যুর ১৪ বছর পরও মিললো অক্ষত মরদেহ
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ১৫:৪৮ | অনলাইন সংস্করণ
রংপুর ব্যুরো
মৃত্যুর ১৪ বছর পরে রংপুর নগরীতে দাফন করা কাফনের কাপড়ে পাওয়া গেছে অক্ষত মরদেহ। মরদেহের কাফনের কাপড়ে লাগেনি সামান্য দাগও। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে রংপুর নগরীর নব্দিগঞ্জ গোদা-শিমলা এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অক্ষত কবরের চারপাশে চিকচিক করছে পরিষ্কার বালু। গত ৩০ মে বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর-কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক মহা সড়কের পাশে গ্যাসের সঞ্চালন পাইপলাইনের কাজ করার সময় কবর স্থানান্তরের সময় ঘটেছে বিরল এই ঘটনা।
মৃত্যুর দীর্ঘদিন পর মৃত মানুষের অবিকৃত মরদেহ দেখতে পেয়ে অবাক হয়েছে স্বজন ও স্থানীয়রা। রংপুরের ইসলামিক স্কলারদের দাবি, আল্লাহর বিধি-নিষেধ মান্যকারী মানুষের রিজিকও কবরে হয়। তাদেরকে কোনো কিছুই স্পর্শ করে না।
জানা গেছে, রংপুর-কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে রংপুর মহানগরীর গোদা শিমলা এলাকায় গ্যাসের সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণকাজ করার সময় স্থানীয় কয়েকটি কবর স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয় স্বজনরা। গত দু’দিনে চারটি কবর স্থানান্তরের পর আরেকটি কবর খুড়তেই চাঞ্চ্যলকর এই ঘটনা চোখে পড়ে। অক্ষত অবস্থায় ধবধবে সাদা কাফনের কাপড় দিয়ে মোড়ানো আছে মরদেহ। পিঁপড়াও স্পর্শ করেনি কাফনের কাপড় কিংবা মৃতের শরীরে। ১৪ বছর আগে দাফন করার সময় যেভাবে কেবলামুখী করে রাখা হয়েছিল সে ভাবেই আজও আছে মৃতের মরদেহ।
জানা গেছে, ২০১০ সালে সেখানে দাফন করা হয়েছিল স্থানীয় শতায়ু বৃদ্ধ আব্দুস সামাদকে। সে সময় তার বয়স হয়েছিল ১২৩ বছরেরও বেশি। মরদেহ উত্তোলনে অংশ নেয়া মরহুম আব্দুস সামাদের ছেলে নুর উন নবী ইসলাম বলেন, ২০১০ সালে তার বাবা যেদিন ইন্তেকাল করেন, সেদিন তিনি নিজে বাড়ি থেকে হেঁটে গিয়ে পুকুরে গোসল করেছিলেন। গোসল করে বাড়িতে গিয়ে চেয়ারে বসার পর পরই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। পরবর্তিতে সড়ক ও জনপথের সড়ক সম্প্রসারন করায় সড়কের মধ্যে পড়ে যায় পারিবারিক কবরস্থান। এর পর স্বজনরা কবরগুলো স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়। দু’দিনে ছোট মায়ের কবর সহ চারটা কবর সরিয়ে নেয়ার পর বাবার কবর সরানোর জন্য খোড়া শুরু করলে প্রথমে দেখা যায় সাদা কাফনের কাপড়। এ সময় কোদাল চালানো বন্ধ করে হাত দিয়ে মাটি সরিয়ে আয়নার মতো চিকচিক করা বালু সরিয়ে পাওয়া যায় অক্ষত কাফনের মরদেহ।
যেভাবে মৃতকে ২০১০ সালে রাখা হয়েছিল, সেভাবেই অক্ষত ভাবে পাওয়া গেছে তাঁর মৃত বাবাকে। কবরে কোন কিছুই নষ্ট হয়নি। কাফনের কাপড়রের ওপরের বাঁধনগুলোও সাদাই রয়েছে। পরে অন্য জায়গায় নিয়ে পুনরায় তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। ঐ পুত্র জানান, ‘তাঁর বাবা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে পড়তেন। আর কৃষির চাষাবাদ করতেন। বাবার বয়স হয়েছিল ১২৩ বছর। আল্লাহ আমার বাবাকে অক্ষত রেখেছেন। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।
অপর পুত্র নুরু ইসলাম বলেন, ১৯৯৮ সালে তিনি হজ করে এসে যে কাপড় রেখেছিলেন। সেই কাপড় দিয়েই ২০১০ সালে তাঁর বাবাকে কবর দেয়া হয়েছিল। দাফন করা কাফনের কাপড়ে অক্ষত মরদেহ পাওয়ার খবর শুনে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়েছিল সেখানে। তারা ছবি তুলে, ভিডিও করে নেটে দিচ্ছিল। এ ব্যাপারে আলেমদের সাথে পরামর্শ করে ঐ মরদেহ দ্রুত কবরস্থ করা হয়।