নয়দিন পর স্বজনের দেখা পেল লাশের পাশে পড়ে থাকা শিশুটি
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৪, ১৭:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ
নেত্রকোণা প্রতিনিধি
অবশেষে ঘটনার ৯ দিন পর স্বজনের দেখা পেল রাস্তায় মায়ের লাশের পাশে পড়ে থাকা শিশুটি। শিশুটির নাম আলিফ মিয়া (২)। সে ময়মনসিংহ সদরের দাপুনিয়া গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবুল মনসুর ও আনোয়ারা বেগমের ছেলে।
গত ২৯মে নেত্রকোণার পুর্বধলা উপজেলার কাছিয়াকান্দা গ্রামের রাস্তায় আনোয়ারা বেগমের লাশ পাওয়া যায়। এই লাশের পাশ থেকেই অবচেতন অবস্থায় আলিফ মিয়াকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে (মচিমহা) পাঠানো হয়।
শিশুটির পরিচয় ও স্বজনের দেখা পাওয়ার বিষিয়টি জানিয়েছেন মচিমহা’র ৩৩নম্বর ওয়ার্ডের স্টাফ নার্স জাকিয়া সুলতানা। তিনি শুক্রবার (৭জুন) জানান, বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়ে আলিফের স্বজনরা হাসপাতালে আসেন। এ সময় আলিফ তার বড় বোন দাবি করা হাসি আক্তারের কোলে বসে পরম মমতায় দীর্ঘ সময় কাটায়। বর্তমানে আলিফ শঙ্কামুক্ত হলেও কথা বলছে না। হাসপাতালে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, উদ্ধার আলিফকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে মচিমহায় প্রেরণ করা হয়। সেখানে স্বজনহারা শিশুটির পরম মমতায় দেখাশোনা ও পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করেন পুর্বধলার বিশকাকুনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ রুস্তম আলী ও এলাকার বাসিন্দা সুজাত মিয়া। শিশুটি স্বজন পাওয়ায় তারা হাঁফ ছেড়েছেন।
হাসি আক্তারসহ অন্যরা জানান, আবুল মনসুর একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ায় তিনি আনোয়ারাকে (আলিফের মা) বিয়ে করেন। আনোয়ারার বাবার বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায়। তিনি গত ২৮মে মুক্তাগাছায় বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে ছেলে আলিফকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। এর পর তাদের খোঁজ ছিল না।
পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, গণমাধ্যম ও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই শিশুর ছবি দেখে তার স্বজনরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। শিশুটি মচিমহায় চিকিৎসাধীন আছে। এই ঘটনায় থানার এসআই মোঃ তারিকুজ্জামান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্ঠা চলছে।
তিনি আরো জানান, অনেক চেষ্ঠার পরও ওই নারীর (৩০) পরিচয় ও স্বজন খোঁজে না পাওয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে গত ২জুন আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে নেত্রকোণা শহরের সাতপাই কবরস্থানে লাশের দাফন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (৬জুন) স্বজন দাবি করা হাসি আক্তারসহ কিছু লোক ময়মনসিংহ হাসপাতালে ওই নারীর পাশ থেকে উদ্ধার করা শিশুটিকে দেখতে আসেন। ওই নারী ও শিশুর পরিচয়সহ সার্বিক বিষয় নিশ্চিত ও রহস্য উদঘাটনের জন্য পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদের নির্দেশে জেলা পুলিশের সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী সাদিককে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।