মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাত ও নাফনদীতে সেন্টমার্টিনগামি নৌ যানে গুলি বর্ষণের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে খাদ্যপন্য নিয়ে কক্সবাজার শহর থেকে যাত্রা দিয়েছে এমভি বার আউলিয়া নামের জাহাজ।
শুক্রবার দুপুর ২ টা ১৫ মিনিটের দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজটি যাত্রা দিয়েছে।
জাহাজটিতে ২ শত মেট্টিক টন চাল, ডাল, তেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী রয়েছে। একই সঙ্গে জাহাজে করে ঘরে ফিরছেন নানা প্রয়োজনে আসা সেন্টমার্টিনের দেড় শতাধিক মানুষ। এমভি বার আউলিয়ার পরিচালক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেনের সাথে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাত ও সেন্টমার্টিন রুটে নৌ যানের উপর মিয়ানমার থেকে তিন দফায় গুলি বর্ষণের ঘটনায় ওই রুটে নৌ যান চলাচল বন্ধ হয়। যার কারণে দ্বীপের ১০ হাজার বাসিন্দাদের খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংকট দেখা মিলে। বুধবার জেলা প্রশাসনের বিশেষ সভায় বিকল্প পথে সেন্টমার্টিনের যাতায়তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ সিদ্ধান্তের আলোকে বৃহস্পতিবার বঙ্গোপসাগরের সাবরাং মুন্ডার ডেইল উপকুল ব্যবহার করে সীমিত পরিসরে যাত্রীবাহি ট্রলার চলাচল শুরু করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে খাদ্য পণ্য নিয়ে পাঠানো হল কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ‘এমভি বার আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজে। জাহাজে পাঠানো খাদ্য দিয়ে আগামী একমাস দ্বীপের বাসিন্দারা চলতে পারবে।
এডিএম ইয়ামিন হোসেন বলেন, দ্বীপের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে জাহাজটি পাঠানো হল। ওখানে সেন্টমার্টিনের অনেক বাসিন্দা জাহাজে করে ঘরে ফিরছেন।
এমভি বার আউলিয়ার পরিচালক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, এই জাহাজটি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে পর্যটন মৌসুম অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে যাতায়ত করে আসছিল। এখন দ্বীপে প্রয়োজনে জাহাজটি পাঠানো হল। এটি শনিবার দ্বীপ থেকে কক্সবাজারে ফিরবে। দ্বীপের কোন মানুষ জরুরি প্রয়োজনে কক্সবাজার আসলে ওইদিন আসতে পারবেন। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নয়, প্রশাসনের আহবান ও দ্বীপের বাসিন্দাদের প্রয়োজনে এটির যাত্রা। প্রশাসন যতদিন বলবেন ততদিন যাত্রা দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়তকারি নৌযান লক্ষ্য গুলিবর্ষণের কারণে সাতদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় শুরু হয়েছে ট্রলার চলাচল। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় মেরিন ড্রাইভ সড়ক সংলগ্ন টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডারডেইল এলাকার সাগর উপকূলের পয়েন্ট দিয়ে সেন্টমার্টিন থেকে ৩ টি ট্রলার যোগে ৩ শতাধিক মানুষ টেকনাফ আসেন। একই সঙ্গে ৩ শতাধিক মানুষ দ্বীপে গেছেন।