আসন্ন ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে টিকেট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে র্যাবের বিশেষ অভিযানে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানাধীন শিবগঞ্জ এলাকা হতে উত্তরবঙ্গের টিকেট কালোবাজারি চক্রের প্রধান দুই সদস্য রায়হান ও আনিছুরকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৩ ।
শুক্রবার বেলা ১২ টায় রংপুরস্থ র্যাব-১৩’র সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার সত্যাতা নিশ্চিত করেন কোম্পানী কমান্ডার সিপিসি-২, নীলফামারী মোঃ মেহেদী হাসান।
এ সময় র্যাব কমান্ডার বলেন, ঈদ-ঊল-ফিতর এবং ঈদ-উল-আযহা দুই ঈদেই সাধারণ জনগণ ছুটি কাটাতে তাদের পরিবারের কাছে যায়। উত্তর বঙ্গের লোকজনের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ট্রেন। অনেকে ট্রেনে যাতায়াতের মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। কিন্তু টিকেট বিক্রি শুরু হওয়ার সাথে সাথেই টিকেট কালোবাজারি চক্রের কারণে অনলাইনে আসার সাথে সাথে বুক হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে তারা এই টিকেট কালোবাজারি করে অনেক বেশি দামে বিক্রি করে। তারা একধরনের সিন্ডিকেট এবং তারা মোবাইলে বিভিন্ন অ্যাপ্স (ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ) এর মাধ্যমে গ্রুপ পরিচালনা করে থাকে। তাদের পরিচালিত গ্রুপে টিকেটের যাবতীয় তথ্য যেমন, কার কাছে কতটি টিকেট আছে, টিকেটের দাম কত, কোন ট্রেনে কয়টি টিকেট আছে, কে কয়টা টিকেট বিক্রয় করবে বিস্তারিত তথ্য তারা তাদের গ্রুপে শেয়ার করে থাকে।
মেহেদি হাসান বলেন, এরই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার র্যাব-০৩ ব্যাটালিয়ন টিকেট কালোবাজারি চক্রের উপর এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। তাদের দেওয়া তথ্য মতে আমরা জানতে পারি যে, ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানাধীন শিবগঞ্জ বাজারস্থ এলাকায় টিকেট কালোবাজারি চক্রের সদস্যরা অবস্থান করছে। পরবর্তীতে র্যাব-১৩, সিপিসি-২, নীলফামারী ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল কর্তৃক ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানাধীন ১০নং জামালপুর ইউয়িনের অন্তর্গত ৩নং ওয়ার্ড এর শিবগঞ্জ বাজারস্থ পীরগঞ্জ হইতে ঠাকুরগাঁও গামী পাঁকা রাস্তার পশ্বিম পার্শ্বে ১নং আসামী মোঃ রায়হান বাসস্থ সারোয়ার হোমিও হল (রায়হান কম্পিউটার্স) এ আজ রাত ৩টায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে টিকেট কালোবাজারি চক্রের প্রধান ২ জন সদস্য মোঃ রায়হান , মোঃ আনিছুর রহমান দ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ সময় ধৃত আসামীদ্বয়ের নিকট হতে টিকেট কালোবাজারি কাজে ব্যবহৃত ২টি মনিটর, ১টি প্রিন্টার, ১টি সিপিইউ, ৩টি এ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল এবং ১৪৫টি ট্রেনের টিকেট উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও তাদের নিকট হতে উদ্ধারকৃত মালামাল প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পরীক্ষা করে দেখা যায় তারা টিকেট কালোবাজারি চক্রের সাথে জড়িত। তাদের ব্যবহৃত কম্পিউটার এবং মোবাইলে টিকেট কালোবাজারির সবধরনের তথ্য ও অনলাইন টিকেট পাওয়া যায়।
টিকেট কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে র্যাব শুরু থেকেই কাজ করে আসছে। ঈদকে ঘিরে রেলস্টেশনে টিকেট কালোবাজারিদের থেকে যাত্রীদের নিরাপদ রাখার জন্য র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এ সময় র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
