কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহে এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৯৭ তম ঈদুল আজহার জামাত। প্রতিবছর এ ঈদগাহ মাঠে আশেপাশের জেলার মুসুল্লিরা ঈদের জামাতে অংশ নেন। ঈদের দিন সকাল নয়টায় একটি মাত্র জামাতের জন্য ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। ঈদ জামাতকে ঘিরে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আবহাওয়া বৈরী থাকলেও নামাজের সময় মুসুল্লিদের কাতার সোজা করার জন্য দাগ কাটা শেষ হয়েছে। দুই'শো বছর ধরে প্রতি বছরই কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের জামাতের জন্য নেওয়া হয় ব্যপক প্রস্তুতি। এবারও সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে স্থানীয় এবং দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের কথা মাথায় রেখে। বংশ পরম্পরায় এ মাঠে নামাজ পড়েন এ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মুসুল্লিরা।
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের নামাজ চলাকালীন শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের একটি নিরাপত্তা চৌকিতে জঙ্গিদের অতর্কিত হামলায় দুই পুলিশ সদস্য সহ নিহত হয় চার জন। সেই থেকে ঈদের জামাতে বাড়তি নিরাপত্তার উপর জোর দেয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, এবার ঈদগাহ পর্যবেক্ষণের জন্য ৬ টি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি ড্রোন ক্যামেরা সহ পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে জেলা শহরসহ ঈদগাহ।
জায়নামাজ ছাড়া কোনকিছু নিয়ে ঈদগাহে প্রবেশ না করার জন্য মুসুল্লিদের উৎসাহিত করছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বরাবরের মতো দূর-দূরান্তের মুসুল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।
জনশ্রুতি আছে, ১৮২৮ সালে প্রথম ঈদুল ফিতরের বড় জামাতে এ মাঠে প্রথম সোয়ালাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় “সোয়ালাখিয়া”। পরবর্তীতে যা শোলাকিয়া নামে পরিচিতি পায়।