চাঁদপুর লঞ্চঘাটে বন্ধ হচ্ছেনা যাত্রীদের ব্যাগ টানাটানি
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৪, ১৫:৫২ | অনলাইন সংস্করণ
চাঁদপুর প্রতিনিধি
আরামদায়ক ভ্রমণ হওয়ার কারণে ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলার হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করে। কিন্তু সদরঘাট থেকে যাত্রীরা স্বাভাবিকভাবে আসতে পারলেও চাঁদপুর লঞ্চঘাটে নেমে হয়রানির শিকার হন। এখানে বিভিন্ন এলাকার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকরা যাত্রীদের মালপত্র ও ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করেন। এ নিয়ে প্রতিনিয়ত ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা। তবে এদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী চেষ্টা করলেও চিত্র একই রকম থেকে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চাঁদপুর লঞ্চঘাটের দ্বিতীয় পন্টুনে অবস্থান করে দেখাগেছে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আসা এমভি ইমাম হাসান-৭ নামে লঞ্চের সামনে বহু অটোরিকশা চালক দাঁড়িয়ে। যাত্রীরা লঞ্চ থেকে নামা মাত্রই তাদের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি শুরু করছেন। সেখান দাঁড়িয়ে তারা রায়পুর, ফরিদগঞ্জ ও হাইমচর বলে হাকডাক দিচ্ছেন। এ সময় অনেক যাত্রীকে তাদের আচরণে বিরক্তিবোধ করতে দেখাগেছে।
ঢাকা থেকে আসা হাইমচরের যাত্রী সোলায়মান মিয়া বলেন, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এসেছি। এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়ানোর আগে চালকরা টানাটানি শুরু করেন। এটি একটি বিরক্তিকর বিষয়। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর লোকজন এদিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।
লঞ্চঘাটের টিকিট কাউন্টারের পাশেই অটোরিকশা স্ট্যান্ড। সেখানে আরো ভয়াবহ চিত্র। যাত্রীরা টিকিট কাউন্টার পার হলেই তোপের মুখে পড়তে হয় চালকদের। পুরুষ যাত্রীদের হাত ধরে এবং নারী যাত্রীদের ব্যাগ ধরে টানাটানি শুরু করেন অটোরিকশা চালকরা। এমন সময় যাত্রী নেয়ার প্রতিযোগিতায় মারামারি শুরু হয় চালকদের মধ্যেও।
ঢাকা থেকে আসা ফরিদগঞ্জের যাত্রী মো. আরিফ হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে চাঁদপুর ঘাট পর্যন্ত কোন হয়রানি নেই। খুবই আরামদায়ক ভ্রমন। তবে নিজ এলাকায় এসে ঘাটের মধ্যে চালকদের বিশৃঙ্খল অবস্থায় পড়তে হয়। তারা কে কার আগে যাত্রী নিবেন এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার প্রতিযোগিতায় নামেন। যে কারণে আমাদের মত সাধারণ যাত্রীরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। একই ধরণের অভিযোগ করেছেন আরো বেশ কয়েকজন যাত্রী।
ঘাটের টিকিট কাউন্টারে থাকা বিআইডাব্লিউটিএর একাধিক কর্মচারি জানান, ঘাটের এই যাত্রী হয়রানি চিত্র একই ধরণের। যাত্রীর সংখ্যা বাড়লে তাদের বিশৃঙ্খলা অনেক বাড়ে।
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমরা যাত্রীদের হয়রানি থেকে রক্ষায় অনেকবার চালকদের আটক করেছি এবং আইনের আওতায় এনেছি। এখনো আমাদের নৌ পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে হয়রানি করা চালকদের এনে বুঝানো হয়। এরপরেও তাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা নাহিদ হোসেন বলেন, লঞ্চঘাটে চালকদের এই পরিস্থিতির জন্য ঈদের সময়ে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সঙ্গে নিয়ে আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে নিয়ন্ত্রণ করেছি। এখন যদি একই চিত্র হয়, তাহলে আবারও নৌ পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করবো এবং আমাদের কর্মকর্তাদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিব।