যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের জনদূর্ভোগ এখনও কমেনি এবং সেইসাথে অনেক স্থানে ভাঙ্গনও দেখা দিয়েছে। যমুনার পানি বর্তমানে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে উজানের ঢল ও বর্ষণে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। এতে নদীর তীরবর্তী চৌহালী, বেলকুচি, শাহজাদপুর, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ৩৭টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। বন্যার পানিতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে এবং তিল,পাট ও কাউনসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলের অনেক পরিবার স্থানীয় ওয়াবদা বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও জ্বালানী সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ বিকেলে জেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণেও বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দূর্ভোগ বাড়ছে। স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্বাবধানে কাজিপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অটোমেশিনে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
এছাড়া যমুনায় পানি কমতে থাকায় যমুনার তীরবর্তী ওই ৫টি উপজেলার অনেক স্থানে ভাঙ্গনের শুরু হয়েছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান জানান, যমুনা নদীর তীরবর্তী ওই ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ইতোমধ্যে ১০০ মেট্রিক টন চাল, ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ বন্যায় নৌকা ডুবে ২ জন ও পানিতে ডুব ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় স্থানীয় এমপি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে পাউবোর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মুখলেসুর রহমান সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের ভাঙ্গন এলাকা ও স্পার বাঁধ পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই উপজেলার মেঘাই স্পার বাঁধ, হাটপাচিল ও চৌহালীর ভাঙন কবলিত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাত-দিন ভাঙ্গন অঞ্চলে নজরদারি করছেন। যেকোনো সমস্যা দেখা দিলে জিওব্যাগ বা জিওটিউব ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ করা হবে। এজন্য স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে নদী ভাঙ্গনের এখনও ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়নি।
এ সময় পাউবো বগুড়া অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হাসান ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।