ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুরে সংঘর্ষে নিহত ৫, আহত দুই শতাধিক

রংপুরে সংঘর্ষে নিহত ৫, আহত দুই শতাধিক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রংপুর বিভাগীয় শহরে।

রোববার (৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সহ ৫ জন নিহত, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রংপুর মহানগরীতে আওয়ামী লীগের জেলা ও মহানগর কার্যালয়, বদরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, পীরগজ্ঞ উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর আগুন দিয়েছে ।

কাউন্সিলর মৃত্যৃর বিষয়টি রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহমুব রহমান মন্জু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধান হারা ও তার সহযোগী শ্যামলকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করেছে। কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের মেট্রোপলিটন পরশুরাম থানা কমিটির সভাপতি।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে যুবলীগ নেতা খাইরুজ্জামান খশরু, ও মাসুমের লাশ পড়ে আছে । রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্দার আব্দুল জলিল ও মিজানুর রহমান মিজান নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১০ টারদিকে রংপুর মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ঘিরে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন নগরীর টাউন হলের সামনে ও সিটি কর্পোরেশনের সামনের রাস্তায়।

বেলা ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জাহাজ কোম্পানি মোড় থেকে পায়রা চত্বরে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে তারা সিটি করর্পোরেশনের দিকে চলে যায়। পরে টাউন হলকেন্দ্রিক অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা যোগ দিলে পাল্টা ধাওয়া করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে গুরুতর আহত হন শতাধিত।

রংপুর সিটি করপোরেশনের সামনে অবস্থান করা এনটিভির ক্যামেরাপারসন আরমান, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার ফকরুল শাহীন, নিউজ টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার রেজাউল ইসলাম মানিক, একুশে টিভির ক্যামেরাম্যান আলী হায়দার রনি, ইত্তেফাকের ফটো সাংবাদিক রাশেদ রাব্বি, অনলাইনের মিজানসহ ১০ জন গণমাধ্যম কর্মীরা মারধর শিকার হন।

অন্যদিকে রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের এমপি ডিউক চৌধুরীর বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন. মিঠাপুকুরের সাবেক এমপি আশিকুর রহমানের বাড়ি ও অফিস ভাংচুর, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগুন , মিঠাপুকুর উপজেলার পরিষদ চত্বরে ইউএনও অফিস, বেগম রোকেয়া অডিটোরিয়াম, থানা গেইট. আনসার ভিডিপিসহ বিভিন্ন দফতরে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা।

রংপুর-২ (বদরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্যের বাসভবন ছাড়াও বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র টুটুল চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক পলিন চৌধুরী ও সাবেক মেয়র উত্তম কুমার সাহার বাসভবনে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।এক দফা দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বদরগঞ্জ পৌর শহরের জিতেন দত্ত মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ধাওয়া করে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা আত্মরক্ষায় এমপির বাসভবনে গিয়ে আশ্রয় নেন। এ সময় শিক্ষার্থীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে সংসদ সদস্যের বাসভবন। পরে তারা এমপির বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করে অন্তত ২০টি মোটরসাইকেলসহ তার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ চালায়।

এই মুহূর্তে রণক্ষেত্র রংপুর। দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর রংপুরের প্রধান নগরীর সিটি করর্পোরেশনের সামনে, সুপার মার্কেট, জাহাজ কোম্পানি ও পায়রা চত্বরসহ বিভিন্ন এলাকা দখলে নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

রংপুর,সংঘর্ষ,নিহত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত