চোখের জলও শুকিয়ে গেছে শহীদ সুজনের পরিবারের

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১৬:০৯ | অনলাইন সংস্করণ

  হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর নতুন করে স্বাধীনতা পাওয়ার উল্লাস যখন চারদিকে, তখন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান সুজনকে হারিয়ে কেঁদে কেঁদে চোখের জল শুকিয়ে ফেলেছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার শহীদ সুজন হোসেনের পরিবার।

জানা গেছে, পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে বাড়ি ছেড়ে ঢাকা আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করতেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান সুজন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয় মিছিলে যোগ দিয়ে গত ৫ই আগষ্ট আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন। সহযোদ্ধারা তাকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে গেলেও  হাসপাতালে পৌচ্ছানোর আগেই তিনি শহিদ হন। ৬/৮/২০২৪ খ্রি. শহিদ সুজন হোসেনের মৃত দেহ গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে তার নিজ গ্রাামে নেওয়া হয়। সন্তানের মৃত্যুর খবরে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়ে। পুরো এলাকা জুুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। ঐ দিন বাদ আছর তার জানাজা ও শেষকৃত সম্পন্ন করা হয়। অমায়িক ব্যবহারের সুজনের মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল এলাকার মানুষের।

শহিদ সুজন হোসেনের গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার, বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামে। সহিদুল ইসলাম ও রিজিয়া বেগম দম্পত্তির একমাত্র পুত্র সন্তান সুজন হোসেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা শহিদুল ইসলাম বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়ে আছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম সুজন হোসেনের এমন মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে।

সুজনের বাবা সহিদুল ইসলাম বলেন,পাঁচজনের অভাবী সংসারের হাল ধরেছিল একমাত্র ছেলে, পুলিশের গুলিতে কলিজা ছেড়া ধন সেই ছেলে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর পুরোপুরি থেমে গেছে সেই সংসারের চাকা। ছয় আগষ্ট সুজনের মরদেহ বাড়িতে আসার পর থেকে আজ পর্যন্ত খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে তার পরিবারের বাকি সদস্যরা। কম বয়সে সংসারের হাল ধরে দুই বোনের বিয়ে দিয়েছিল সুজন। বাড়িতে রয়েছে তার আরও একটি ছোট বোন। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় এক বোন তার সন্তানসহ আবার ফিরে এসেছেন বাবার বাড়িতে। হতবিহ্বল মা-বাবা ও বোনদের পাশে স্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। দেশের দায়িত্ব দেওয়া অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ও স্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতা পেলে কিছুটা হলেও কষ্ট কমবে বিধ্বস্ত এই পরিবারের। শহিদ সুজন হোসেনের শহীদি মর্যাদা নিশ্চিত হবে কিনা এ নিয়ে দুঃচিন্তায় আছে পরিবারটি।

এমতাবস্থায় পরিবারটির জন্য সমাজের সজ্জন ব্যক্তি ও সরকারি সহায়তার বিশেষ প্রয়োজন।