হাবিপ্রবিতে প্রশাসনিক পদ থেকে ৩২ শিক্ষকের পদত্যাগ

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১৬:২১ | অনলাইন সংস্করণ

  বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) বিরাজ করছে অস্থিতিশীল অবস্থা। ইতোমধ্যেই প্রশাসনিক ৫১টি পদে থাকা শিক্ষকদের মধ্যে ৩২ জন শিক্ষক তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গিয়ে ভাইস চ্যান্সেলরের (ভিসি) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান। ফলে ভাইস চ্যান্সেলরের পদটি শূন্য থাকার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বিরাজ করছে শূন্যতা।

এদিকে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি আবাসিক হল খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও হল সুপার না থাকায় হলগুলো খুলে দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রেজিস্ট্রার। অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় মঙ্গলবার বেলা ৪টা পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয়নি হলগুলো। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৫ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান হাবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম কামরুজ্জামান। পরে গত ৯ আগস্ট তিনি চ্যান্সেলর ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে ভাইস চ্যান্সেলর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

একই দিনে রেজিস্ট্রারের কাছে পদত্যাগ করেন হাবিপ্রবির প্রক্টর প্রফেসর ড. মামুনুর রশিদ, ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর মাহবুবুর রহমান। এরপর প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করতে শুরু করেন শিক্ষকরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হাবিপ্রবিতে প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে দায়িত্বে ছিলেন প্রায় ৫১ জন শিক্ষক। হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এদের মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রশাসনিক বিভিন্ন পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ৩২ জন শিক্ষক। আরও বেশ কয়েকজন পদত্যাগের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এদিকে ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগের পর অধিকাংশ প্রশাসনিক পদ থেকে শিক্ষকরা পদত্যাগ করায় এক প্রকার প্রশাসন শূন্য হয়ে পড়েছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে হিমশিম খাচ্ছেন রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান।

এ ব্যাপারে হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর সাইফুর রহমান বলেন, আমিও পদত্যাগ করতে প্রস্তুত আছি; কিন্তু কি করব- এই মুহূর্তে আমি পদত্যাগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়টি চলবে কী করে।তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক স্বাভাবিক কাজকর্ম রয়েছে, যেগুলো চলমান রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমন্বয় করেই কাজগুলো করতে হচ্ছে। এজন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

এদিকে সোমবার হাবিপ্রবির ৯টি আবাসিক হল খুলে দেওয়ার কথা এবং আগামী ১৮ আগস্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা; কিন্তু হল সুপার না থাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয়নি হাবিপ্রবির আবাসিক হলগুলো।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার প্রফেসর সাইফুর রহমান বলেন, ৯টি হলের হল সুপার পদত্যাগ করেছেন। হল সুপার না থাকায় হলগুলো খুলে দিলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। সেজন্য হলগুলো খুলে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১১ আগস্ট থেকে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলো। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হবে বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।