অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
ঈশ্বরগঞ্জে ভাঙনের মুখে ফসিল জমি, ঝুঁকিতে আশ্রয়ণের ৫ ঘর
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৪, ১৮:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে বিলীন হয়ে গেছে ফসলি জমি। ভাঙনের মুখে পড়েছে প্রায় ২০ পরিবারের বসতবাড়ি এবং ঝুকিতে রয়েছে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫ টি ঘর।
এবিষয়ে ভোক্তভোগীরা সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একাধিকার অভিযোগ করেও পাননি স্থায়ী কোন সমাধান। যেকারণে অভিযুক্ত বালুখেকো মো. দুলাল মিয়া হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। তোয়াক্কা করেন না কারো কথা। ভোক্তভোগীরা মুখ খুলতে চাইলেই দেন হত্যার হুমকি।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের ভাটি-চর নওপাড়া গ্রামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অনুমতি ছাড়া পুকুর খননের নামে বালু বিক্রির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে কৃষিজমি,বেশ কয়েকটি রাস্তা ও একটি সরকারি একটি আশ্রয়ণ কেন্দ্র।
স্থানীয়দের অভিযোগ,অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করায় পাড় ভেঙে কৃষিজমি, গাছপালা বিলীন হয়েছে। পরিবারগুলোর বসতবাড়িও এখন ভাঙনের মুখে। এতে করে আবাদি জমি ও ভিটেমাটি নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন ২০ পরিবার ও অনেক কৃষক। ভিটেমাটিতে ভাঙনের শঙ্কায় এই পরিবারগুলোর মাথায় হাত।
ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, তাদের ফসলি জমি ও বসতবাড়িসহ দেড় বিঘারও বেশি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ভুক্তভোগী মো.ইলিয়াস উদ্দিন নামের একজন বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে গভীর পুকুর খনন করে বালু উত্তোলন করায় আমাদের ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে বাড়িঘর। এখন কোথায় যাব? আমরা এর প্রতিকার ও সুষ্ঠু বিচার চাই।
ক্ষতিগ্রস্ত মো. সুমন মিয়া (৩০), মো. সাইদুল ইসলাম (৩৫) বলেন, মাছ চাষের নাম করে দুলাল মিয়া ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বিগত কয়েকদিন ধরে দুলাল মিয়া ড্রেজার মেশিন বসিয়ে টানা বালু উত্তোলন শুরু করেছে। এতে আমাদের ফসলিজমি,সরকারি ঘর,রাস্তা ও বসতবাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। দুলাল মিয়া কারো কথা শুনে না।
আরেক ভোক্তভোগী আরফান আলী বলেন,'এর আগেও কয়েকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও ভূমি অফিসে আমরা অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু আমরা স্থায়ী কোন সুরাহা পাইনি। বালু উত্তোলন করতে দুলাল মিয়াকে বাঁধা দিলে আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। আমাদের দেখার কি কেউ নেই?
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. দুলাল মিয়া বলেন, ২০০৫ সালে আমি নিজের জায়গায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করেছিলাম মাছের ব্যবসা করার জন্য। পরে গত দুইবছর ধরে অতিবৃষ্টি কারণে পুকুরের পাড়গুলো ভেঙে যায় ও ফসলের জমির মাটি পুকুরে এসে ভরাট হয়ে যাচ্ছিল। তাই পুকুরের পাড় নতুন করে ভরাট করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ভেঙে যাওয়া জমি মেরামত করে দিতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছি। আর তাদেরকে হত্যার হুমকির বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি পুকুরে মাছের ব্যবসা করি, বালু উত্তোলন বা বিক্রি করি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সারমিনা সাত্তার বলেন, 'বিষয়টি জানার পর আমি খোঁজখবর নিয়েছি। প্রয়োজনীয় কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি।