কক্সবাজারে সাবেক এমপি আশেক ও কমলসহ ২৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৪, ১১:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজারে পৃথক ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল ও আশেক উল্লাহ রফিক সহ ২৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার কক্সবাজার মডেল থানা ও কুতুবদিয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। এই দুটি মামলায় ২৬১জনকে আসামী করা হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট্র সূত্র জানিয়েছেন, কক্সবাজার শহরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বিএনপির জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাবেক হুইপ ও কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সাবেক সংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল সহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রোববার রাতে কক্সববাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি করা হয়।

এই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল ছাড়াও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহীনুল হক মার্শাল, পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক সোহেল। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়, সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান, পৌর যুবলীগের সভাপতি ডালিম বড়ুয়া, পৌর কাউন্সিল সালাউদ্দিন সেতু, হেলাল উদ্দীন কবির, সাহাব উদ্দিন সিকদার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম, মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকসুদসহ ৫১ জনের নাম উল্লেখ এবং ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত করে আসামি করা হয়।

মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ করেন, ৪ঠা আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় অভিযুক্তরা কিরিচ দিয়ে কার্যালয়ের বিপুল পরিমাণ আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেন। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রকিবুজ্জামান জানান, শুক্রবার আরও একটি মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায়ও সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমলসহ ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।

অপরদিকে, কক্সবাজারের মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ তাহের, কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবরসহ ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) কুতুবদিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগটি দায়ের করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কক্সবাজার উত্তর আঞ্চলিক শাখার সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী মুকুল।

কুতুবদিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাঈদীন নাঁহী অভিযোগটি আমলে নিয়ে ওসি কুতুবদিয়া থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

মামলার অভিযোগে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের ৬১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মামলার বাদী সংসদ সদস্য প্রার্থী নোঙর প্রতীকের শরিফ বাদশার প্রধান নির্বাচনি সমন্বয়ক ও এজেন্ট ছিলেন, নৌকার প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিকের নির্দেশে ৪ জানুয়ারি নোঙর প্রতীকের প্রার্থীর ধুরুং স্টেডিয়ামে নির্বাচনের জনসভায় হামলা করে প্যান্ডেল, চেয়ার, মাইক ভাংচুর করে, পরবর্তীতে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কুতুবদিয়া উপজেলা কার্যালয়ের হামলা করে ভাঙচুর চালানো হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করে।

৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের দিন সন্ধ্যা ৭টায় ফাকা গুলি বর্ষণ করে মামলার আসামিরা বাদীর কৈয়ারবিল সমিতির রোড়স্থ অফিসে হামলা করে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ টাকা নিয়ে নেয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন।

বাদীর আইনজীবী এডভোকেট ফিরোজ আহমদ জানান, মামলার আসামিদের মধ্যে অন্যতম কুতুবদিয়া-মহেশখালীর সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আশেক উল্লাহ রফিক, কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোহাম্মদ তাহের, বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আবুল কালাম, কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ওসি কুতুবদিয়াকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।