শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় নারী-পুরুষদের বৈষম্য দূর করে সমানুপাতিক হারে নিয়োগসহ বিভিন্ন দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে চাকুরী প্রত্যাশী শ্রমিকরা। এতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও বাইপাইল-আব্দুলআহপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছেড়ে দিলেও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক এখনো (দুপুর ২টা ৪০ মিনিট) বন্ধ রয়েছে। যার ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ে এ সড়কে চলাচলরত মানুষজন।
এদিকে, কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের অন্তত ৩০টির মত পোশাক কারখানা ছুটি দিয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে নবীনগর-চন্দা মহাসড়কের আশুলিয়ার ডিইপিজেড, বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের নিশ্চিন্তপুর ও জামগড়া এলাকার বিভিন্ন কারখানার সামনে চাকুরী প্রত্যাশীরা জড়ো হয়ে মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। তবে ডিইপিজেড ছাড়া অন্যান্য কারখানার সামনে জড়ো হওয়া চাকুরী প্রত্যাশীরা বিক্ষোভ করে সড়ক ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে।
বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান, সকালে বেশ কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে জামগড়া এলাকার 'দি রোজ" কারখানায় ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে তারা আইডিএস কারখানায় ইটপাটকেল ছুড়ে চলে যায়। তবে তারা শ্রমিক কিনা তা বোঝা যায়নি। তবে চাকুরী প্রার্থী হতে পারে। কারখানায় ইটপাটকেল ছুঢ়ার ঘটনায় সড়কের দুই পাশের প্রায় অধিকাংশ কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। বিক্ষুব্দ চাকুরী প্রত্যাশী বেশ কয়েকজন শ্রমিক জানান, চাকুরী নিতে গেলে বৈষম্য করে কারখানার কর্তৃপক্ষ। তারা মেয়েদের বেশী চাকুরী দিয়ে থাকে, তবে ছেলেদের চাকুরী কম হয়। এই বৈষম্য কেন থাকবে? আমরা চাই সবাই সমহারে চাকুরী পাক।
শিল্প পুলিশ জানায়, আন্দোলনরত শ্রমিকরা মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে রাখে এবং বিভিন্ন কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে করে শিল্পাঞ্চলে উত্তেজনা শুরু হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের দুই পাশের অন্তত ৩০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একপর্যায়ে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের ব্যারিকেড তুলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ডিইপিজেডের মূল ফটকের সামনের চাকুরী প্রত্যাশীরা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে।
শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক মো. সারোয়ার আলম বলেন, চাকুরীর দাবীতে আন্দোলন করছেন বেকাররা। এছাড়াও পোশাক কারখানায় নারী-পুরুষের সমানুপাতিক হারে নিয়োগের দাবিসহ আরও কয়েকটি দাবি রয়েছে তাদের। সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের অবরোধ তুলে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ডিইপিজেড এলাকার অবরোধ তুলে নিতে আন্দোলনকারীদের বোঝানো হচ্ছে। তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।