ডাকাতিয়া নদীর তীব্র ভাঙনে চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদি ইউনিয়নে গাছতলা এলাকায় নদীর তীরবর্তী বসতঘর কবরস্থান কৃষি জমি ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে।
রোববার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগাদি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড গাছতলা জমদ্দার বাড়ি, খান বাড়ি ও গাজী বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত কয়েক দিনে ডাকাতিয়ার করালগ্রাসে তলিয়ে গেছে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে প্রায় ৫০০ পরিবার। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে এলাকাটি। ডাকাতিয়া নদী প্রতিবছর অল্প অল্প করে ভাঙে। গত এক দশকে শুধু বাগাদি গাছতলা ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকার অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি। এত ক্ষতির পরও বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যায়। অচিরেই নদী ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভিটেমাটি হারিয়ে রাস্তায় ছিন্নমূল হয়ে পড়বে ঐ এলাকার নদীর পাশে বসবাসকারী প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী লিটন পাঠান জানান, ‘প্রতি বছর নদী আমাদের জমি একটু একটু করে ভেঙে নিয়ে যায়। নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন ভোটকে অবগত করার পরেও তারা পদক্ষেপ নেয়নি। এর পূর্বে চাঁদপুরের ৩ আসলে সাবেক এমপি দীপু মনি ভাঙ্গন রক্ষায় আশ্বাস দিয়ে গেলও কার্যকর হয়নি। অল্প অল্প করে ভাঙ্গে, তাই কেউ আমাদের দিকে নজর দেন না। গত ১০ বছরে আমাদের এলাকার প্রায় এক কিলোমিটারের মতো জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। ছিন্নমুল হয়ে গেছে প্রায় শতাধিক পরিবার। এখন আমাদের ভিটেবাড়ি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িটা নদীতে তলিয়ে গেলে থাকবে কোথায় জানেনা কেউ। রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হবে।
এলাকায় বসবাসকারী আসমা বেগম জানান, ‘এখন নদীটি যেখানে ভাঙছে, সেখানে আমাদের বসতঘর, রান্নাঘর ছিল। গত বছর ঘরগুলো সরিয়ে নিয়েছি। এরপর আর জায়গা নেই। নদীতে ভাঙলে কী করব জানি না।’
নদী থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরত্বে রয়েছে বাগাদি ইউনিয়নের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজারসহ অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি। নদী ভাঙন রোধ না হলে হুমকির মুখে পড়বে এসব প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাই ক্ষতিগ্রস্তরা নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, বাগাদি গাছতলা ও মৈশাদি সহ ডাকাতিয়া নদীর বেশ কয়েকটি এলাকা ভাঙনরোধে একটি ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এটি পাশ হলেই ভাঙন রক্ষায় কাজ শুরু করা হবে।