বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগদর দক্ষিণ আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, বহু রক্তের বিনিময়ে আজকে আমরা নিশ্বাস ফেলে কথা বলার যে বাংলাদেশ পেয়েছি। এখন আবার বাংলাদেশকে নিয়ে নানামূখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে যে গণ বিপ্লব এবং নতুন স্বাধীনতা, সেই স্বাধীনতাকে বিপর্যস্ত করার জন্য নতুন কোনো চক্রান্ত করা হলে এদেশের ছাত্র-জনতা তা প্রতিহত করবে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের চেয়ারম্যানঘাট একটি কমিউনিটি সেন্টারে জামায়াতে ইসলামী চাঁদপুর জেলা শাখা আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশ ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে বর্তমান সরকার। সেই ছাত্র-জনতার পরিবারগুলোর পাশে সরকারকে দাঁড়ানোর জন্য আমরা অনুরোধ করেছি। নিহত এবং আহত পরিবারগুলো যাতে কর্মসংস্থান পায়। আর আহত ছাত্রদের যেন পড়ার ব্যবস্থা হয়। একই সাথে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে ব্যবস্থা গ্রহণ এই সরকারকে নিতে হবে। এই গণ গণঅভ্যুত্থান ছাত্র-জনতা যে নাজরানা পেশ করেছে, আল্লাহতায়ালা যেন তাদের ত্যাগ ও কোরবানি কবুল করেন।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা জানেন যে এই গণহত্যাকারী হাসিনা প্রয়োজন হলে পাখিরমত গুলি করে ১৮ কোটি মানুষকে হত্যা করে ক্ষমতায় থাকায় যেত, তাহলে ক্ষমতায় থাকতো। আমরা দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনী অভিনন্দন জানাই। তিন বাহিনীর প্রধান শেখ হাসিনাকে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন জনগণের ওপর আমরা গুলি চালাতে পারবো না। ঠিক সেই সময় শেখ হাসিনা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ব্যর্থ হয়েছে এবং সেনাবাহিনী অনুরোধ রাখেননি, তখনি শেখ হাসিনা পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
এই নেতা বলেন, গণহত্যাকারি, জালিম, অভিশপ্ত শেখ হাসিনাসহ তার দল, সহযোগী সংগঠন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ও তাদের দোষর এবং যাদের কারণে শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠেছে তাদের সকলকে বিচারের আওতায় আনার দাবী করছি এবং আনতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের এসব অপরাধের জন্য জামায়াতে ইসলামী আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিচারের দাবি জানিয়েছে। একই সাথে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও ছাত্ররাও একই দাবি জানিয়েছে। সে দাবির প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার ইতোমধ্যে ট্রাইবুন্যাল পুনর্গঠন করে এই বিচারের জন্য প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশকে সুখী ও সমৃদ্ধশারী হিসেবে গড়ে তুলতে হলে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন কোন রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
নুরুল ইসলাম বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ কোন লুটপাট, যারা ভাংচুর করে, অগ্নিসংযোগ করে এবং চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমিরে জামায়াতের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়েছে। আমরা আপনাদের আহবান জানাতে চাই, ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে আমাদের যে অর্জন, সেই অর্জনকে নস্যাত করার জন্য কোন ধণের চক্রান্তকে বরদাস্ত করবো না। তাদের এই চক্রান্তকে প্রতিহত করতে জনগণকে সাথে নিয়ে আপনাদের ভূমিকা রাখতে হবে। চাঁদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আবদুর রহিম পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী এডভোকেট মাসুদুল ইসলাম বুলবুল ও সহকারী সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়ার যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আমির ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
এছাড়া আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবেরর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন ও মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহ সেক্রেটারী মুহাম্মদ কামাল হোসাইন, চাঁদপুর জেলা জামায়াতের নায়েব আমির মাওলানা বিল্লাল হোসেন মিয়াজী, শাহরাস্তি উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবুল হোসাইন, ছাত্রশিবির জেলা সভাপতি মহররম আলী ও শহর ছাত্রশিবির সভাপতি ফারুক হোসেন।