ঢাকা ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বেরোবির উপহারের বাস উধাও

বেরোবির উপহারের বাস উধাও

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহৃত একটি উপহারের বাস (রংপুর-ব-০৫- ০০১৬) হঠাৎ পরিবহন পুল থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বাসটি কোথায় আছে সেটি কেউ বলতে পারছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের (প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী) স্বাক্ষরে বেরোবি/রেজি/২০২৪/৮১ স্মারকে এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুলকে পাঠানো এক চিঠিতে বাসটি ফেরত নিতে বলা হয়। কিন্তু বেরোবি প্রশাসন বাসটি হস্তান্তর করেছে বললেও কোন প্রকার নথিপত্র দেখাতে পারেনি।

জানা যায়, ২০১২ সালের ১২ মার্চ তারিখে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য ৫২ সিটের একটি বাস উপহার দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মু আবদুল জলিল মিয়ার হাতে বাসটির চাবি আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করেন ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছায়াদত হোসেন বকুল। সে সময় বাস উপহার প্রদানের ছবি ও প্রেস রিলিজ জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রচারও করা হয়। কিন্তু ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর তারিখে ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের পক্ষে বাসটি ফেরত চেয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট রইচ উদ্দিন বাদশা।

এতে বলা হয়, বাসটি ৩০ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হয়েছিল এবং তিন মাসের ভাড়াও তারা পেয়েছেন। কিন্তু তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবী হিসাব দপ্তরে এ ধরনের কোন চুক্তি বা ভাড়া পরিশোধের প্রমাণ পাননি। বরং চাবি হস্তান্তরের ছবি ও উপহার প্রদান সংক্রান্ত সংবাদ জাতীয় ও স্থানীয় একাধিক সংবাদপত্রে প্রচারের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন।

আবার, গত ৩০শে এপ্রিল ২০২৪ তারিখে ছায়াদত হোসেন বকুলের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে বাসটি ফেরত চাওয়া হলে সদ্য পদত্যাগকারী ভিসি প্রফেসর ড. হাসিবুর রশীদ উপহারের বাসটি ফেরত প্রদানের অনুমতি দেন এবং রেজিস্ট্রার চিঠি দিয়ে গাড়িটি ফেরত নিতে বলেন।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তরের এক কর্মকর্তা, পরিবহন পুলের এক কর্মকর্তা এবং একজন চালক এই ঘটনার সাথে জড়িত। তারা বাস ফেরত বিষয়ে ছায়াদত হোসেন বকুলের মাধ্যমে উপাচার্যকে বাস ফেরত দিতে কৌশলে বাধ্য করেন এবং বাসটি বিক্রি করে নিজেদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, "সাবেক উপাচার্য ড. হাসিবুর রশীদের লিখিত অনুমতিক্রমে গাড়ি ফেরত আদেশ দেওয়া হয়। গাড়িকে রিসিভ করেছেন কি না তা পরিবহন পুল বলতে পারবে।"

পরিবহন পুলের সাবেক পরিচালকের কাছে জানতে চাওয়া হয় আপনি কি গাড়ি হস্তান্তর করছেন কি না উত্তরে ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘না না না! আমি কি দিতে পারি? আমি গাড়ি কিনতেও পারি না দিতেও পারি না।" এই বলে ফোন কেটে দেন।

এ বিষয়ে পরিবহন দপ্তরের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার তাপস কুমার গোস্বামী এ বিষয়ে বলেন, ‘আসলে বাস ফেরত দেওয়া হয়েছে কিন্তু ভুলে হস্তান্তরের কোন ডকুমেন্টস গ্রহণ করা হয়নি।’

ওয়াজেদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ছায়াদত হোসেন বকুলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া গেছে।

বেরোবি,বাস,উপহার,উধাও
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত