কাউখালীতে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচিতে নিম্ন মানের চাল বিক্রির সময় ৫৪ টন চাল জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কাউখালীতে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ফেয়ার প্রাইজ কার্ডের বিপরীতে নির্ধারিত মূল্যে নিম্ন মানের পুষ্টি মিশ্রিত সরকারি চাল বিক্রির অভিযোগের সংবাদ গত ২ সেপ্টেম্বর ‘দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর ৫৪ টন নষ্ট চাল জব্দ করে প্রশাসন।
জানা গেছে, উপজেলার ৭ জন ডিলারের মাধ্যমে সরকার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতার ফেয়ার প্রাইজ কার্ডের মাধ্যমে ২০১৬ সাল থেকে ৫টি ইউনিয়নের ৭ জায়গায় বিক্রি করা শুরু হয়।
উপজেলায় ২৫৬১ জন সুবিধা ভোগী বছরে ৫ মাস এই সুবিধা ভোগ করেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখ ৩০ কেজি করে ৭৫ টন চাল ১৫ টাকা কেজি দরে প্রতি সদস্যকে বিতরণ করার কার্যক্রম শুরু হয়। তখন দেখা যায় যে চাল গুলো অতি নিম্নমানের।
বিশেষত, হতদরিদ্র সাধারণ মানুষকে পুষ্টিহীনতা থেকে রক্ষা করার জন্য সরকার পুষ্টি মিশ্রিত এই খাদ্য বান্ধব্য কর্মসূচি চালু করেন। সেই অনুযায়ী ১%পুষ্টি মিশ্রন করা হয়। বিধি মোতাবেক মিলারের মাধ্যমে প্রথমে খাদ্য গুদাম থেকে সরকার চাল সরবারাহ করেন। পরে মিলার ঐ চালে পুষ্টি সংযুক্ত করে পুনরায় ডিলারদের কাছে পৌছে দেয়।
এই উপজেলায় খাদ্য বান্ধবের পুষ্টি সংযুক্ত করার দায়িত্ব পান, আছিয়া ও ফাতেমা পুষ্টি রাইস মিল মঠবাড়িয়ার স্বত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন।
অভিযোগ উঠেছে, মিলার জাহাঙ্গীর হোসেন কাউখালী খাদ্য গুদাম থেকে উন্নত মানের চাল নিয়ে বিক্রি করে নিম্ন মানের চালে পুষ্টি মিশিয়ে সরবারহ করেন। এতে তার ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা বাড়তি মুনাফা হয় বলে অনেক চাল ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন।
ভোক্তারা গত মাসে এই চাল খাওয়ার অনুপযোগী বলে অভিযোগ করলে বর্তমান মাসের চাল বিতরণের আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শন করে এর সত্যতা পেয়ে চাল বিক্রয় বন্ধ করে দেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মিলার জাহাঙ্গীরকে খাদ্য গুদাম থেকে নেওয়া স্যম্পল চালের সাথে মিল রেখে চাল সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু মিলার জাহাঙ্গীর ওই নির্দেশ উপেক্ষা করে পুনরায় নিম্ন মানের চাল সরবরাহ করলে নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা চাল বিক্রি বন্ধ করে চাল জব্দ করার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা খাদ্য কর্মকতা মেহেদী হাসান জানান, নেছারাবাদ উপজেলার খাদ্য কর্মকর্তা মো. তৌবুর রহমানকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়ছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি ৩ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।