অস্থির সময়েও প্রস্তুত রাঙামাটিতে দুর্গোৎসব
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:০৮ | অনলাইন সংস্করণ
রাঙামাটি প্রতিনিধি
ঘরের দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। পাহাড়ে চলমান অস্থিরতার মধ্যেও থেমে নেই দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি। নানা উদ্বেগ উৎকণ্ঠা মাথায় নিয়ে দুর্গাপুজাকে সর্বজনীন উৎসবে রুপ দিতে রাঙামাটির বিভিন্ন পুজা মন্ডপে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। সাজ সজ্জার পসরা রাঙিয়ে মন্দিরে মন্দিরে যেন প্রতিমা কারিগর, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাটছে বিরামহীন ব্যস্ততা। বসে নেই স্থানীয় প্রশাসনও। পাহাড়ী জেলা রাঙামাটির দুর্গাপুজাকে শান্তিপুর্ণভাবে শেষ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতির কমতি নেই নিরাপত্তা ব্যবস্থার।
এদিকে, চলমান অস্থিরতায় দুর্গোৎসব পালনে কোন প্রকার অনাকঙ্খিত পরিস্থিতি যাতে না ঘটে সেজন্য পুজা উদযাপন পরিষদ ও মন্দির পরিচালনা কমিটির সাথে মতবিনিময় করেছে বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন। তাদের পক্ষ থেকে মন্দির সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক কমিটিও করে দেয়া হয়েছে। পুজামন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সহযোগিতা করবে এসব কমিটি।
রাঙামাটি জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৪৪টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রাঙামাটি সদরে ১৫টি, কাপ্তাই উপজেলায় ৮টি, রাজস্থলীতে ৪টি, কাউখালীতে ৪টি, বরকলে ২টি, বাঘাইছড়িতে ৫টি, লংগদুতে ৩টি এবং নানিয়াচর, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলার প্রতিটিতে ১টি করে মণ্ডপে পুজার আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ৯ অক্টোবর থেকে দুর্গাপুজা শুরু হয়ে ১৩ অক্টোবর শেষ হবে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমলেন্দু হাওলাদার জানান, রাজনৈতিক ও পাহাড়ের চলমান অস্থিরতার কারণে কিছুটা শঙ্কা কাজ করছে। তবে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে প্রত্যাশা হিন্দু সম্প্রদায়ের।
প্রতিবারের মতো এবারও জেলার সবচেয়ে বড় পুজোর আয়োজন করছে জেলা শহরের রিজার্ভ বাজার শ্রী শ্রী গীতাশ্রম মন্দির পরিচালনা কমিটি। পুজোয় নানা ধরনের প্রতিযোগিতার পাশাপাশি প্রদর্শিত হবে থিম ' দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন’। এর পেছনে বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। প্রতিবছর পুজোয় গীতাশ্রম মন্দিরের থিম দেখার জন্য ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বিপুল সংখ্যক পুর্নার্থী ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।
শ্রী শ্রী গীতাশ্রম মন্দিরের পুজার উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজু প্রসাদ দে জানান, আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে সম্পন্ন হলেই, তবেই স্বস্তি। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ সবাই সহযোগিতার নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পূজাকে ঘিরে জেলায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। জেলার মধ্যে ৪৪ টি মণ্ডপকে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সব মণ্ডপে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান বলেন, জেলাবাসীকে সুন্দর একটি উৎসব উপহার দিতে পূজার শেষদিন প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত নিরাপত্তাসহ সার্বিক নজরদারির ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। দুর্গোৎসব শান্তিপুর্ণ আয়োজনে তিনি সহযোগিতা কামনা করেন।