ঢাকা ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুর রেলওয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে রেলপথ অবরোধ

রংপুর রেলওয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে রেলপথ অবরোধ

রংপুর রেলওয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে ও উন্নয়নের ১০ দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আনুমানিক সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তারা।

এ সময় রংপুর রেলষ্টেশনে অবরোধ করে রাখা হয় বুড়িমাড়ী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুর গামী আর.এল মেইল ট্রেন। রংপুর থেকে আরো চারটি আন্তঃনগর ট্রেন, ব্রডগেজ রেল লাইন করাসহ বিভিন্ন দাবী তুলেধরে শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যোগাযোগ উপদেষ্টার কাছে স্বারকলিপি দেয়া হয়।

বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, বাংলাদেশ ভূখন্ডে প্রথম রংপুর জেলা শহরের মানুষ ট্রেন ভ্রমনের সুযোগ পায়। রংপুরে রেল চালু হয় ২ জুলাই ১৮৭৮ সালে। শেষ বড় কোনো সংস্কার হয় ব্রিটিশদের হাত ধরে যার প্রায় ১৫০ বছর পরেও তেমন কোনো পরির্বতন হয়নি। সময়ের সাথে রংপুর বিভাগীয় স্টেশন বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে পারেনি। এই রংপুর একটি বিভাগ যার সাথে না আছে অন্য কোনো বিভাগের সরাসরি রেল সংযোগ, না আছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যাত্রী সুবিধা, পয়নিষ্কাষন, ব্যবহার করার মতো শৌচাগার।দেশের অন্য সকল বিভাগের দিকে তাকাতে পারেন সেগুলোর সাথে কি রংপুর স্টেশন সামঞ্জস্যপূর্ন? আবার রংপুর একটি শিক্ষা নগরী হওয়াতে সরাসরি প্রায় এক কোটি মানুষ রংপুর স্টেশনের প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত যা সমগ্র দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে রংপুর স্টেশনের মান তরান্বিত করা সময়ের দাবি মাত্র। তাই রংপুর বাসী এই স্টেশনে যে সকল অবকাঠামোর চাহিদা অনুভব করে শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবী জানান।

দাবীগুলো হলো- রংপুরকে ব্রডগেজ নেটওয়ারকের আওতায় অন্তর্ভূক্ত করা। পার্বতীপুর থেকে রংপুর ৩৮কি.মি. রেলপথে সমান্তরাল নতুন ডুয়েলগেজ লাইন করলে রংপুর ব্রডগেজ নেটওয়ার্কের আওতায় চলে আসবে এবং রংপুর থেকে মংলা পোর্টসহ রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সাথে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। টারমিনেটেড ফ্যাসিলিটি সম্পন্ন আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন, কমপক্ষে ৮০০ মি. দৈর্ঘ্যের আটটি প্ল্যাটফর্ম নিশ্চিত করতে হবে। ব্রডগেজ ও মিটারগেজ পৃথক ওয়াসপিট বাস্তবায়ন করা। টিএক্সআর ফ্যাসিলিটিজ, রেক অবস্থান ও শান্টিং এর প্রয়োজন অনুযায়ী ইয়ার্ড নির্মাণ করা। সিবিআই সিগন্যাল সিস্টেমের প্রবর্তন করা।স্টেশনের সকল ধরনের ফ্যাসিলিটির বাস্তবায়ন যেমন-ফুটওভার ব্রিজ, বিস্তৃত পার্কিং এরিয়া, পর্যাপ্ত লাইটিং, প্রয়োজন অনুসারে রেলের বিভিন্ন দাপ্তরিক অফিস রুম, উন্নত সৌচাগার, অত্যাধুনিক গেস্টরুম, আবাসিক হোটেল। রংপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া কোনো ট্রেন অপারেশনাল ক্রু, গার্ড, ইঞ্জিন পরিবর্তন জনিত কারণে অধিক সময় অবস্থান করতে না হয় তার ব্যবস্থা রংপুরে বিদ্যমান রাখা। কাউনিয়া বাইপাস এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে যেন রংপুর-পার্বতীপুর-সান্তাহার এবং রংপুর-গাইবান্ধা সান্তাহার দূরত্ব একই হয় কিংবা নূন্যতম পার্থক্য বজায় থাকে। স্টেশন ও যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রংপুর রেলওয়ে ফাড়িকে রেলওয়ে থানায় রুপান্তর করতে হবে। বর্তমান রংপুর স্টেশনের পরিবেশ বিবেচনা করে স্টেশন কোলাহলমুক্ত স্থানে স্থানান্তর করতে হবে, সেক্ষেত্রে শহরের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নূন্যতম দূরতে করতে হবে।

এছাড়া যে ধরনের রেল যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবেঃ-উৎস-গন্তব্য রংপুর ঠিক রেখে রংপুর থেকে প্রত্যেক বিভাগীয় শহরগামী দুই জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন নিশ্চিত করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই রংপুরকে ভায়া করা যাবে না। দূরত্ব অনুসারে রংপুর থেকে প্রতিবেশী জেলা সমূহের শেষ স্টেশন পর্যন্ত আপ ডাউন মিলিয়ে কমপক্ষে ৪-৬ ট্রিপ নিশ্চিত করতে হবে। উৎস-গন্তব্য রংপুর ঠিক রেখে রংপুর এক্সপ্রেস এর পথ পরিবর্তন করে রংপুরের সাথে দীর্ঘ ১৩ বছরের বাঞ্চনার অবসান ঘটাতে হবে।

রংপুর,রেলওয়ে,অবরোধ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত