চাঁদপুরে মা ইলিশ সংরক্ষণে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা

প্রকাশ : ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ উপলক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির মিলনায়তনে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জেলা টাস্কফোর্স কমিটির আয়োজনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, সাধারন জনগন নদীতে যায় না। নদীতে মাছ ধরতে যায় জেলেরা। আর জেলেরদের নিয়ন্ত্রণ করেন । আপনাদের টাকায় জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করেন, নদীতে জাল ফেলেন। শুধু মুখে বললে হবে না বদলে ফেল বাংলাদেশ গড়তে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ইলিশের মান রক্ষায় চাঁদপুরে একটি ল্যান্ডিং স্টেশন করা হবে। চাঁদপুর সদরে ১৬ হাজার জেলে নৌকা রয়েছে। অভিযানের সময় কোন নৌকায় ইঞ্জিন থাকতে পারবে না। ইলিশ সম্পদ রক্ষা হলে সবচেয়ে বেশী লাভবান হয় জেলেরা। মা ইলিশ রক্ষায় এ বছর কোষ্টগার্ড, নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য আনা হবে। এছাড়া সেনাবাহিনী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের সাথে কথা হয়েছে, তারাও সহযোগিতা করবে। অভিযানের সময় কোন বরফকল খোলা থাকবে না। 

জেলা প্রশাসক বলেন, ১৩ তারিখের পর কেউ একটি ইলিশ কিনতে পারবে না। যদি ১২ তারিখ কেউ মাছ কিনেন তা থাকবে ফ্রিজে। যার কাছে একটি ইলিশ মাছ পাওয়া যাবে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। একটি মাছ যদি ৪০% ডিম ছাড়তে পারে, তাহলে নদীতে ইলিশে সয়লাভ হবে। আমরা যদি এর যত্ন না নেই তাহলে একদিন নদী থেকে ইলিশ হারিয়ে যাবে। অভিযানের সময় ২৪ ঘন্টাই দিন থাকবে, আমাদের কাছে কোন রাত থাকবে না। জোয়ারের সময় অভিযান বেশী জোরদার করা হবে। মাছকে সমুদ্র থেকে কেউ টেনে আনতে পারবেন না। মাছ তার গতিতে আসে। তাই মাছের গতি পথে যেন বাঁধা না হয়, পানি দূষণ মুক্তসহ সে সকল কাজ করা হবে। আমরা জেলে নয়, জেলেদের গডফাদার ধরবো।  চাঁদপুরে ৪৩ হাজার জেলে রয়েছে। এর মধ্যে প্রকৃত জেলে নেই। অতি শিঘ্রই হালনাগাদ করে প্রকৃত জেলেদেরর অগ্রাদিকার দেয়া হবে। তারা নিজেরা তাদের তথ্য মৎস্য অফিসে নিয়ে গিয়ে জমা দিবেন। আমরা চাই না কারো উপরে আইন প্রয়োগ করতে, ২২ দিন চাঁদপুরে কোন জেলে নদীতে নামবেন না।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মেহেদী হাসানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম, নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত,জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল বারী জমাদার মানিক, সাধারণ সম্পাদক হাজী শবেবরাত সরকার, মৎস্য ব্যবসায়ী আকবর আলী, কে এম সালাউদ্দিন।

পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান বলেন, নদীতে শুধু নৌ পুলিশ কাজ করে না আরো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে। ইলিশ মূলত সামদ্রিক মাছ। তবে পেটে ডিম নিয়ে মিঠা পানিতে আসার কারনে আমাদের দায়িত্ব  এর রক্ষনাবেক্ষণ। আমাদের যার যার অবস্থান থেকে এই সম্পকে রক্ষা করা হবে। নদীতে কতগুলো শাখা নদী ও নৌকা রয়েছে, সেই বিষয়ের উপর কাজ করা হবে। সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়, তবে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযানকে সফল করা হবে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম বলেন, সরকারের আইনকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা কাজ করে থাকি। সুযোগ সন্ধানী অনেকে থাকবে তাই সকলকে সজাগ থাকতে হবে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় সকলে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করতে হবে।