মানিকগঞ্জে খাল সংস্কার প্রকল্পে ধীরগতি, ভোগান্তিতে পৌরবাসী
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:০২ | অনলাইন সংস্করণ
দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও পৌর কর্তৃপক্ষের দায়সারা গেছের তদারকির কারণে ঝিমিয়ে পড়েছে মানিকগঞ্জ শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দৃষ্টিনন্দন খাল সংস্কার প্রকল্প। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় প্রকল্প শেষ হওয়ার আগেই দেবে যাচ্ছে রাস্তা, সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল আকারের গর্ত। এতে দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ মে ৫ খন্ডের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্যাকেজ আকারে যৌথভাবে ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয় মেসার্স এপেক্স এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স কামরুল এন্ড ব্রাদার্স (জেবি) কে। এরা পতিত ফ্যাসিবাদ সরকারের প্রভাবশালী নেতা। নাগরিক সুবিধার চেয়ে প্রকল্পের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াই ছিল তাদের মূল টার্গেট। এমন মতামত মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাধারণ নাগরিক ও সচেতন মহলের।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২৫কোটি ১লাখ ৫৯ হাজার টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের কাজটি ২৮ কোটি ৫৬লাখ ৮২ হাজার ৯৩১ টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। কাজের মেয়াদ শেষ হবার পর একাধিকবার সময় বাড়িয়েও কাজ সম্পন্ন করছেনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্বিতীয় নগর অঞ্চল উন্নয়ন (সিআরডিপি-২) এর অর্থায়নে চলমান কাজটি বন্ধ রয়েছে। সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ থেকে গঙ্গাধর পট্টি সড়ক পর্যন্ত মাটি খুঁড়ায় রাস্তাটি বন্ধ রয়েছে প্রায় এক বছর ধরে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ থাকায় শহীদ রফিক সড়ক ও গার্লস স্কুল সড়কে যানজট পরিস্থিতি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপারে দাঁড়িয়েছে। খালপাড় থেকে বান্দুটিয়া পর্যন্ত রাস্তাটি কিছুদিন আগে চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলেও কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় পৌরবাসীর দুর্ভোগ এখনো ঘোচেনি।
মানিকগঞ্জ পৌর বিএনপি'র সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বজলুর রহমান (ভিপি) বলেন, নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। তিনি এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
শহরের শহীদ রফিক সড়কের ব্যবসায়ী বাবুল আহমেদ বলেন, রাস্তার কাজটি নিম্নমানের। ভালোভাবে রোলিং ছাড়াই রাস্তাটি করা হয়েছে। এজন্য প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা দেবে বিশালাকারের গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। আমার দোকানের সামনের রাস্তায় হঠাৎই দেবে গেছে। গতকাল সেখানে একটি রিকশা যাত্রীসহ পরে যায়। অল্পের জন্য যাত্রী প্রাণে গেলেও তারা মারাত্মক আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানেরও কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। গত ৫ আগষ্টের পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আ. ন. ম. গিয়াসউদ্দিন বলেন, রাস্তায় পুরাতন কিছু ব্যবহার হচ্ছিল সেটা আমরা বন্ধ করেছি। বর্তমানে কোন অনিয়ম হচ্ছেনা। সময়মত কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে।