ঈশ্বরদীতে টিসিবির কার্ড বণ্টন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষ, আহত ৩

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ

  ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার ঈশ্বরদীতে টিসিবির কার্ড বণ্টন নিয়ে বচসার জের ধরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে বিএনপির ৩ কর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার বিকেলে উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে আহত বিএনপি কর্মীরা হলেন– মিলন বিশ্বাস, রাজিব মোল্লা ও রাব্বি মোল্লা। তাদের মধ্যে রাজিব ও রাব্বি লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক বিরু মোল্লার ছেলে। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের যৌথ মতামতের ভিত্তিতে লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির ১০০ জন ও জামায়াতের জন্য ৫০ জনকে টিসিবির কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে জামায়াতের স্থানীয় নেতা আকরাম হোসেনসহ কয়েকজন তাদের লোকজনের নামে টিসিবির কার্ড বরাদ্দ ঠিকঠাক আছে কিনা দেখতে ইউপি পরিষদে আসেন। এ নিয়ে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক বিরু মোল্লার সঙ্গে তারা কথা বলেন।

একপর্যায়ে বিরু মোল্লা জামায়াত নেতা আকরামকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তুমিতো আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতা, জামায়াতের নেতা হলে কবে?’ এ কথায় ইউপি সচিবের কক্ষের মধ্যেই তাদের দু’জনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রঞ্জু বিশ্বাস ও ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিজানুর রহমান খোকনের মধ্যস্থতায় দু’জনের ঝগড়া মীমাংসাও করা হয়।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরে বিএনপির লোকজন দলবদ্ধ হয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা আকরাম হোসেনের বাড়ির দিকে বিক্ষুব্ধ হয়ে যাওয়ার সময় জামায়াতের লোকজন তাদের প্রতিহত করতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিজানুর রহমান খোকন বলেন, ১০-১২টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে একদল যুবক ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এসে সংঘর্ষ করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের  ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারা একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ইউনিয়ন যুবদলের নেতা ও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাহাবুল হক বিশ্বাস বলেন, ঘটনার সময় সাবেক ছাত্রদল নেতা তানভির হাসান সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা সেখানে হাজির হলেও কিছুক্ষণ ঘটনাস্থলে থেকে তারা চলে যান।

ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি রঞ্জু বিশ্বাসের ভাষ্যমতে, তিনি ব্যক্তিগত কাজে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে এ ঘটনার মুখে পড়েন। বিএনপি নেতা বিরু মোল্লা ও সদ্য জামায়াতে যোগ দেওয়া আকরাম হোসেনের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনা মীমাংসা করে দেওয়ার পর তাদের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক বিরু মোল্লা বলেন, আকরাম হোসেন কিছুদিন আগেও আওয়ামী লীগ করতেন। এখন জামায়াতে যোগ দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে জামায়াত নেতা আকরাম হোসেন বলেন, সংঘর্ষের জন্য বিরু মোল্লার লোকজন দায়ী। তারাই প্রথমে তাদের ওপর হামলা চালাতে যায়।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।