পেকুয়ায় পরিবারের ১০ সদস্যকে নিয়ে শহীদ মিনারে অনশন উন্নয়ন কর্মীর

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

কক্সবাজারের পেকুয়া শহীদ জিয়াউর রহমান উপকূলীয় কলেজের মাঠে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পরিবারের ১০ সদস্যকে নিয়ে অনশন করছেন নাজিম উদ্দিন নামের এক উন্নয়ন কর্মী। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে অনশনে বসেন ওই উন্নয়ন কর্মী ও তার পরিবারের সদস্যরা। নাজিম উদ্দিন একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় টেকনাফে কর্মরত আছেন।

নাজিম উদ্দিন বলেন, পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বারেক, পেকুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রশিদ ও বারবাকিয়া ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের অত্যাচারে বসতঘরে থাকতে পারছেন না। তাঁরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বসতবাড়ি জবর দখলের চেষ্টা চালিয়েছে। এসময় অন্তত তিনবার গুলিবর্ষণ করে এবং বসতঘরে লুটপাট করেছে। গুলিবর্ষণের ছবিসহ থানায় এজাহার দেয়া হলেও পেকুয়া থানার তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছ আমাদের মামলা নেয়নি। আওয়ামী লীগের প্রভাব দেখিয়ে তারা উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে। গত ১৭ বছর যেভাবে নির্যাতিত হয়েছি, এখন এরচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছি।

নাজিম উদ্দিন বলেন, গত ১৭ বছর আমরা নিজের বসতভিটায় থেকেছি চোরের মতো। পরিবারের ২১ সদস্য মানবেতন জীবন যাপন করেছি। আমরা ১৭বছরে একটি রাতও সুখে থাকতে পারিনি। সবসময় শঙ্কায় জীবন কেটেছে। ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে যায় জীবনহাতে। কখন কোন দিক থেকে হামলা করে এই ভয়ে। বারেক, মামুন ও আমিনুর রশিদ ওরা অস্ত্রের গোডাউন। কথায় কথা অস্ত্র নিয়ে বের হয়ে পড়ে। আমিনুর রশিদ গত জানুয়ারিতে দুটি অস্ত্র নিয়ে র্যাবের হাতে ধরা পড়ে। এতোসব প্রমাণ থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

নাজিমের বোন উম্মে কুলসুম চাকরি করেন একটি দেশীয় উন্নয়ন সংস্থায়। তিনি বলেন, দুই একর ২০ শতক জায়গা জমির বিএস রেকর্ডীয় মালিক আমার বাবা। প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে আমাদের অনেক হয়রানি করেছে। গত পাঁচ বছর ধরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রতিপক্ষরা সেসব মানে না। আওয়ামী লীগের সময়ে যেমন মানেনি বর্তমানেও মানছে না। নিজের জায়গা-জমি বুঝে না পেয়ে একধরণের আক্ষেপ করতে করতে আমাদের বাবা মারা গেছেন।

নাজিম উদ্দিন বলেন, আদালতের আদেশ নিয়ে আমরা পুলিশের ধারে ধারে ঘুরেছি। কিন্তু কখনও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমরা থানায় গিয়ে অনেক দেনদরবার করে ওসির সঙ্গে দেখা করি আর ওরা একটি ফোন দিলে সব শেষ হয়ে যায়। আমার পক্ষে আদালতের আদেশ, বৈধ খতিয়ান-সবই আছে, নেই শুধু পেশিশক্তি। এই একটি কারনে আমরা অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি, হয়রানির শিকার হচ্ছি।

জীবন শঙ্কায় থাকায় নিরুপায় হয়ে শহীদ মিনারে অনশন করছেন বলে জানান নাজিম। কোনো প্রতিকার না পেলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করবেন বলে জানান।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বারেকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। 

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দেখি কি করা যায়।