মানিকগঞ্জে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ-পুলিশসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে মানিকগঞ্জে মিছিল বের হলে সেখানে গুলি করে চারজনকে হত্যা করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রায় একযুগ আগের সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৫২ নেতাকর্মী ও ৩৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা হয়েছে। মামলায় ৯০ জন আসামি ছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সাড়ে ১১ বছর পর গোবিন্দল গ্রামের মৃত ইউসুব আলীর ছেলে, নিহত মাওলানা নাসির উদ্দিনের ভাই মো. সহিদুল ইসলাম (৫০) বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল দের কোর্টে এ মামলাটি করেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- সাবেক পৌর মেয়র মীর মো. শাহজাহান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মাজেদ খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান শহীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সায়েদুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার, পৌর প্যানেল মেয়র সমেজ উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিল আব্দুস সালাম খান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিনসহ ৫২ জন।
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, তৎকালীন দায়িত্ব থাকা মানিকগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ ডিবি পুলিশের ওসি মো. মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিঙ্গাইর থানার এস আই আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেনসহ ৩৮ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সিংগাইর পৌরসভার গোবিন্ধল থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। এদিন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রিভলভার, পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ পুলিশ বাহিনীর সাথে উপস্থিত হয়ে বাঁধা দেয়। একপর্যায় সাধারণ মুসল্লিদের লক্ষ্য করে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলে গোবিন্ধল গ্রামের মাওলানা নাসির উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, নাজিম উদ্দীন ও শাহ আলম নিহত হয়। এসময় আহত হয় আরও অর্ধশতাধিক সাধারণ মুসল্লি।
মামলার বাদী মো. শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো পুলিশ বাদী হয়ে গ্রামবাসী ও স্থানীয় বিএনপি-জামায়াতের শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাই সুষ্ঠু বিচারের আশায় আওয়ামী লীগ সরকার পতনের একযুগ পরে এসে গতকাল ৯ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা করেছি।