গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দিন থেকেই নিখোঁজ ছিল কিশোর জিহাদ। আন্দোলনের সময় জিহাদ হয়তো কোনভাবে মৃত্যু বরণ করেছে এটাই ভেবে নিয়েছিল পরিবার। তবে পুলিশের প্রচেষ্টায় দুই মাস পর নিখোঁজ জিহাদের সন্ধান পেয়ে উচ্ছ্বসিত তার পরিবার।
সোমবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে জিহাদকে উদ্ধার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এরআগে, গত ১৮ আগস্ট আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার বাসিন্দা বেলাল হোসেন তার ছেলে জিহাদ নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বেলাল হোসেন বলেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর রাতে জিহাদ বাড়ির পাশে থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর অনেক জায়গায় মাইকিং করেছি, বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও লাগিয়েও তার সন্ধান পাইনি। পরে গত ১৮ আগস্ট আমরা আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। এক পর্যায়ে কোথাও কোন সন্ধান না পেয়ে ভেবেছিলাম জিহাদ আর কোনদিনও ফিরবে না, ও হয়ত মারা গেছে। ছাত্র আন্দোলনের কারণে হাসিনা সরকার পতনের পর হয়ত কোন বিপদে পড়ে জিহাদ মারা গেছে এরকম ধারণা করেছিলাম আমরা। তবে শেষ ইচ্ছা ছিলো, কোন ভাবে যাতে ছেলের লাশটা অন্তত পাই।
তিনি আরও বলেন, সবশেষ গতকাল রাতে জিহাদকে টঙ্গী থেকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন আশুলিয়া থানার এসআই অলোক। আমরা তখনও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে জিহাদকে জীবিত ফিরে পেয়েছি। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আমার ছেলেকে উদ্ধারে অনেক কষ্ট করেছেন।
এসআই অলোক কুমার দে বলেন, উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশে জিহাদ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি তদন্ত শুরু করি। প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে জিহাদকে টঙ্গী এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়।
সে ওই আবাসিক হোটেলে তার বাবা-মা নেই এই পরিচয়ে হোটেল বয়ের চাকরি নিয়েছিলো। জিহাদ মূলত এতদিন আত্মগোপনেই ছিলো। পরিবারের সাথে অভিমান করেই গত ৫ আগস্ট সে বাড়ি থেকে চলে যায়৷
তিনি বল্রন, প্রথম অবস্থায় জিহাদ একটি মোবাইল ব্যবহার করলেও পরে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। সেই মোবাইলের সূত্র ধরেই প্রযুক্তির সহায়তায় জিহাদকে নিখোঁজের ৭০ দিন পর উদ্ধার করতে সক্ষম হই। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে আজ মঙ্গলবার জিহাদকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।