শেরপুরে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গেছে ৭০ কোটি টাকার মাছ
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
ঝিনাইগাতী (শেরপুরে) প্রতিনিধি
শেরপুরে পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গেছে ৭ হাজার পুকুরের মাছ। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ৫ হাজার মৎস্য চাষী। এদের ভাগ্যে জুটেনি সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা। ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধারদেনা ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শতশত মৎস্য চাষি লাভবান হওয়ার আশায় মাছ চাষ করে। কিন্তু গত ৩ অক্টোবর জেলার সীমান্তের মহারশি, সোমেশ্বরী, ভোগাই ও চেল্লাখালি নদীর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিতে যায় শেরপুর সদর, ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, নালিতাবাড়ী ও নকলা উপজেলার ৭ হাজার পুকুরের মাছ। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৭০ কোটি টাকা।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে ৫ হাজার মৎস্য চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বেসরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হতে পারে।
পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে মাছের ক্ষতি হওয়ায় জেলায় আমিষের চাহিদা মেটাতে কঠিন হবে বলে জানা গেছে। শেরপুর জেলায় প্রতিবছর আমিষের চাহিদা ৩২ মেট্রিকটন।
উৎপাদন হতো ৩৫ মেট্রিকটন। উৎপাদিত মাছ জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরে রপ্তানি করা যেতো। তবে মৎস্য চাষিরা ঘুরে দাড়াতে না পারলে চাহিদা মেটাতে কঠিন হবে। ঘাগড়া সরকার পাড়া গ্রামের মৎস্য চাষি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ২০২৩ সালে পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে তাদের যে পরিমানের ক্ষতি সাধিত হয়েছে সে ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
সুরিহারা গ্রামের মৎস্য খামারি সুরুজ মিঞা জানান, তার ৫৬ একর জমির প্রজেক্টের প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। সে এখন দিশেহারা। বন্দভাটপাড়া গ্রামের মৎস্য খামাড়ি উজ্জ্বল মিয়া জানান তার ১০ একর প্রজেক্টের ২০ লাখ টাকার মাছ ভেসে যায়। দাড়িয়ারপাড় গ্রামের সুলতান মিয়ার ১০ একর প্রজেক্টের ২০ লাখ টাকা মাছ ভেসে গেছে। কালিবাড়ী গ্রামের হাজি আশরাফ আলীর ২০ একর প্রজেক্টের ১ কোটি টাকার মাছ ভেসে যায়। একই গ্রামের গোলাম মোস্তফার ১০ একর প্রজেক্টের ২০ লাখ টাকার মাছের ক্ষতি সাধিত হয়।
এর মধ্যেই আবারো পাহাড়ি ঢলের পানিতে তাদের পুকুরের সমস্ত মাছ ভেসে গেছে। এখন তারা দিশেহারা। সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারিরা পায়নি কোন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্মকার বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে খামাড়িদের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া গেলে চাষিদের পুনর্বাসন করা হবে।