ঢাকা ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বছর পার না হতেই কোটি টাকার সেতুর এপ্রোচ ধ্বংস

বছর পার না হতেই কোটি টাকার সেতুর এপ্রোচ ধ্বংস

প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর-ঝিটকা সড়কে নির্মিত ব্রিজের দু'পাশের অ্যাপ্রোচ বছর পার হওয়ার আগেই ধ্বসে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ব্রিজটি। এ নিয়ে এলাকাবাসী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

জানাগেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর মানিকগঞ্জের তত্ত্বাবধানে নির্মিত ব্রিজটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার আতিয়ার রহমানের মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। তবে পতিত আ'লীগ সরকারের সাবেক এমপি এস এম জাহিদের নিকট আত্মীয় জনৈক ঠিকাদার কাজি মাকসুদুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে ওই কাজটি বাগিয়ে নেয়। তদারকি প্রতিষ্ঠান এলজিইডি'র নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা প্রকৌশলী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলীর সাথে আতাত করে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে দায় সারা ভাবে কাজটি শেষ করে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।

এলজিইডি সূত্র জানায়, ২১-২২ অর্থবছরে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৭০ ৭৮২ হাজার টাকার নির্মাণ কাজটি দেওয়া হয় মোহাম্মদপুর এলাকার ঠিকাদার আতিউর রহমানকে। ২০২২ সালের ২ মে কাজ শুরু করে ২৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর কাজটি শেষ করা হয়। ইতোমধ্যে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায় ২০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজের দুপাশের অ্যাপ্রচ ধসে গেছে। নামমাত্র সিমেন্ট ও অপর্যাপ্ত রড ব্যবহার করায় অ্যাপ্রোচের ব্লক গুলো আগলা হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় স্লপিং করা হয়নি। ঝুঁকি নিয়ে যানবাহনগুলো ব্রিজে উঠানামায় করছে।

শিমুলিয়া এলাকার আব্বাস আলী বলেন, এ ব্রীজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এজন্যই এত তাড়াতাড়ি এপ্রোচ ও রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে যেকোনো সময় ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরবে। বিগত সরকার উন্নয়ন কাজের নামে শুধু অর্থ লোপাট করেছে।

একই এলাকার জহুরা বেগম বলেন, অনেকদিন ভোগান্তির পর এ ব্রিজটা বানানো হয়েছিল। এত তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে গেল। এখনো এক বছরই হয়নি।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক রহিম মিয়া বলেন, কয়েকমাস আগে নতুন করে বানানো এ ব্রীজ এখন ঝুকিপূর্ণ হয়ে গেছে। রাস্তার দুইপাশেই ভেঙে গেছে। ঢাল (স্লোপিং) ঠিকমতো না হওয়ায় কোনমতে আমাদের অটোরিকশা চলাচল করতে পারলেও বড়গাড়ি চলাচলে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

এ বিষয়ে ঠিকাদার আতিয়ারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ম্যানেজার মো. জাহিদ হোসেন জানান, কাজটি আমাদের ফার্মের হলেও বাস্তবায়ন করেছে সাবেক এমপি এস এম জাহিদের ফুফাতো ভাই কাজী মাকসুদুল ইসলাম। মাকসুদুল আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এলজিইডি মানিকগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম বলেন, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টির সঠিক কারণ উদ্ঘাটনে জেলা থেকে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে রিপোর্ট প্রদান করবে।

এলজিইডি,মানিকগঞ্জ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত