কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিএনপির মিছিলে গুলি করে মো. মিজানুর রহমান নামে এক ছাত্রদল কর্মীকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম, সাবেক পৌর মেয়র আলমগীর চৌধুরী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী সহ ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪০-৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
হত্যার ঘটনার ১১ বছর পর নিহতের পিতা মোহাম্মদ শাহ আলম বাদী হয়ে গতকাল শনিবার চকরিয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চকরিয়া উপজেলা বিএনপি বিগত ২০১৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিকাল ৩টায় চকরিয়া পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। এ বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিতে কাকারা ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনসাধারণ মিছিল সহকারে চকরিয়া পৌর শহরের দিকে রওয়ানা দেয়। উক্ত মিছিলটি কাকারা ইউনিয়নের পুলেরছড়া এলাকায় পৌঁছলে এজাহার নামীয় আসামীগণ পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাইফেল ও বন্দুক নিয়ে মিছিলকারিদের উপর গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এ সময় মিছিলে অংশ গ্রহণকারীরা প্রাণের ভয়ে দ্বিকবিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে। এক পর্যায়ে ১ নম্বর আসামী হাতে থাকা রাইফেল দিয়ে ছাত্রদল কর্মী মিজানুর রহমানকে পিছনের দিকে গুলি করলে তিনি আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় মিজান ছাড়াও আরও ১৯জন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া ২ নম্বর আসামীর হাতে থাকা রাইফেলের ছোড়া গুলিতে সোনা মিয়া নামের অপর এক বিএনপি কর্মীর পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হকের বাড়ি লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছোঁড়ে। এতে তার বাড়ির দরজা জানালার কাঁচ ও দেওয়ালের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল কর্মী মিজানুর রহমানসহ অন্যান্যদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায মিজানুর রহমান। ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে পুলিশ মিজানুর রহমানের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্ত কাজ সম্পন্ন করে। তবে ওইসময় ছেলে হত্যার ঘটনায় থানায় একটি এজাহার দায়ের করলেও থানা কর্তৃপক্ষ এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে বাদি তার দায়ের করা এজাহারে দাবী করেন। এছাড়া আসামীগণ তৎকালীন সরকারের প্রভাব দেখিয়ে মামলার বাদিকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ায় এ মামলা দায়ের করতে বিলস্ব হয় বলেও এজাহারে উল্লেখ করেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের ভুইয়া বলেন, বিগত ২০১৩ সালে মিজানুর রহমান হত্যার ঘটনায় তার পিতা বাদি হয়ে শনিবার দুপুরে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। পরবর্তীতে এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হয়েছে।