ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যা মামলা নিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির মায়ের দায়ের করা ৭ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগে বিচারাধীন থাকায় ফেনীর সোনাগাজী আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা লোকমান বৃহস্পতিবার খারিজ করেন।
এর আগে বুধবার একই আদালতে নুসরাত হত্যা মামলায় আসামিদের কাছ থেকে ৭৭ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এনে পিবিআইয়ের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন দণ্ডিত আসামি ইমরান হোসেন মামুনের মা নুরনাহার বেগম।
মামলায় পিবিআইয়ের সাবেক ডিআইজি বনজ কুমার, ওসি শাহ আলম, সন্তোষ চাকমা পিবিআই চট্টগ্রাম, পুলিশ সুপার মাঈন উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন, পিবিআই উপ-পরিদর্শক রতেপ চন্দ্র দাস ও লুৎফর রহমান সহ ৭ জনকে বিবাদী করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় মামলা করলে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল মাদরাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বোরকা পরা পাঁচ দুর্বৃত্ত। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ২৮ মে পিবিআই তদন্ত শেষে মাদরাসার অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে ৮৬৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। মাত্র ৬১ কার্যদিবসে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। একই বছরের ৮৭জন স্বক্ষীর স্বাক্ষ্য শেষে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর রায়ে ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।