চকরিয়ায় সাবেক এমপি জাফরের সহযোগি মক্কী ইকবাল গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ
চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমের ঘনিষ্ঠ সহযোগি একাধিক মামলার আসামী কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেনকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকাল দুইটার দিকে চকরিয়া থানা পুলিশ উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাসিম্মাকাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে হত্যা, নির্বাচনী অফিস পোড়ানো ও বিএনপির মিছিলে হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা রয়েছে।
কৈয়ারবিল ইউনিয়নের স্থানীয় লোকজন জানায়, কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর মক্কী ইকবাল হোসেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক এমপি জাফর আলমের অন্যতম সহযোগি হিসেবে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেন। আওয়ামীলীগের কোন ধরণের পদ-পদবী না থাকলেও পরপর দুই বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তিনি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন। সাবেক এমপি জাফর আলমের ছত্রছায়ায় সরকারি জমি দখল, বিচার বাণিজ্য ও সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে মক্কী ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে।
এছাড়া মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, রাস্তাঘাট, সড়ক ও কালভার্টের উন্নয়নের নামে সরকারি বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন বিচারের নামে বিএনপি ও জামাতের নেতাকর্মীদের ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে এনে নানান ধরনের হয়রানী ও নির্যাতন করতেন। মতের বিরোধী হলে মক্কী ইকবাল হোসেনের হয়রানির হাত থেকে বাদ পড়েননি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। বিগত সময়ে সাবেক এমপি জাফরের আশকারা পেয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনকে নানাভাবে হয়রানী করতেন।
গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে হাতঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক। নির্বাচনের সময় কৈয়ারবিল ইউনিয়নে কল্যাণ পার্টির নির্বাচনী কার্যালয় মক্কী ইকবালের নেতৃত্বে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠে। ওইসময় তাকে প্রধান আসামি করে মামলাও করেন কল্যাণ পার্টির দপ্তর সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে গত ২৮ সেপ্টেম্বর শহীদ আবদুল হামিদ চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনালে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদকে দেয়া সংবর্ধনা শেষে বিএনপি নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার সময় সাহারবিল এলাকায় গাড়ির বহরে হামলার অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনায় মক্কী ইকবালকে আসামী করে মামলাও করেছিলো স্থানীয় বিএনপি নেতা।
এছাড়া মক্কী ইকবালের বিরুদ্ধে কাকারা ইউনিয়নের ছাত্রদল কর্মী মিজানুর রহমান হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেন দীর্ঘদিন আত্মগোপন থাকার পর অবশেষ ২৭ অক্টোবর বিকাল দুইটার দিকে কৈয়ারবিল ইউনিয়নের হাসিমারকাটা এলাকা থেকে চকরিয়া থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মঞ্জুর কাদের ভূইয়া বলেন, হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি কৈয়ারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মক্কী ইকবাল হোসেনকে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।