কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩২ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট ভাংচুর, সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ, টমটম পোড়ানো এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি -সাধারণ সম্পাদক সহ এজাহারে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে ৯১ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) কক্সবাজার পৌরসভার ১১নং ওয়ার্ডের বাহারছড়ার এলাকার নূরুল আমিনের পুত্র ওমর ফারুক বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজীম নোমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দীন আহমেদ সিআইপিকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য এজাহারনামী আসামীরা হলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মাহবুবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম মাদু, সাধারণ সম্পাদক এড. সৈয়দ রেজাউর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এড. একরামুল হক, ঝিলংজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, কক্সবাজার শহর জাসদের সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন মাসু, জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আরিফুল মওলা, জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দীণ চৌধুরী, শহর কৃষকলীগের সভাপতি এরশাদুল হক সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম সাদ্দাম হোসাইন, সাধারণ মারুফ আদনান, কক্সবাজার শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুর রহমান, কক্সবাজার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান তারেক, সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দীন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী রাসেল, লাবণী পয়েন্ট ব্যবসায়ী সমিতির নেতা কাশেম আলী, রামু জোয়ারিয়ানালা নন্দখালী এলাকার মো. হোসেনের পুত্র কামাল হোসেন, ঈদগাঁওয়ের বানিয়ারছড়া এলাকার সৈয়দ করিমের পুত্র আবদুর রহিম বাবুল, কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোসাবের হোসেন তানিম, উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়, কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার ফয়সাল আবদুল্লাহ এবং রুমালিয়ারছড়ার বাসিন্দা গোলাম আরিফ লিটন। 

মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেছেন, গত ৩১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের মোটেল রোডস্থ হোটেল শৈবালের সামনে প্রধান সড়কে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র, লাঠি, লোহার রড, ইট-পাথর ও ককটেল জাতীয় বিস্ফোরক দ্রব্যাদি নিয়ে আসামীরা সংঘবদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে সড়ক অবরোধ করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী শ্লোগান দেন। এসময় সড়কের পাশের ল্যামপোস্ট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট ভাংচুর এবং দ্রাহ্য পর্দাথ দিয়ে টায়ার জ¦ালিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে টমটমে অগ্নিসংযোগ করে। এতে জনমনে ভীতি সৃষ্টি হয়। 

এজাহারে বাদি বলেছেন, আসামীরা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ক্ষতি, জননিরাপত্তা বিপন্ন এবং জনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে সংঘবদ্ধ হয়ে এই ত্রাসের ঘটনা ঘটিয়েছে। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। বাদির সামনে এই ঘটনা ঘটে। তাই তিনি জনস্বার্থে মামলাটি দায়ের করেছেন। 

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজীম নোমান বলেন, ‘বাদির দায়ের করা এজাহারটি যাচাই-বাছাই করে মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান জোরদার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত কক্সবাজারে  ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের হামলা ও হত্যার ঘটনায় ২৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে।