বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম বলেছেন, স্বৈরশাসকের দুষ্কর্ম মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। অপশক্তির অপকর্ম বারবার অতীতকে স্মরণ রেখে বুদ্ধিভিত্তিক ভূমিকা পালন করতে হবে।ছাত্র-জনতার মধ্যে অবিশ্বাস এবং ফাটল সৃষ্টি অতীতের স্বৈরশাসক ও তার দোসরদের কাজ।
শুক্রবার নোয়াখালী এক হল রুমে নোয়াখালী জামায়াতে ইসলামির রোকন সম্মেলন ও জেলা আমীর শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানে প্রধান মেহমান হিসেবে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মাসুম বলেন, এদেশে স্বৈরাচার ও তার সহকারীরা জাতীর দুশমন, গত ১৭-১৮ বছর ধরেও যারা গুম খুন হত্যা মিথ্যা মামলার সাথে জড়িত তারা আর কোনোদিন ক্ষমতায় আসুক দেশবাসী তা চায় না।
বিগত ১৭-১৮ বছর অন্যায় কাজের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিতে দেশবাসী দাবী জানায়। যারা দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যেতে চাই তারা ষড়যন্ত্রকারী। যারা মনুষ্যত্ব, মানবতাহীন, ফ্যাসিস্ট তাদেরকে এদেশে প্রতিরোধ গড়ে তুলে বাতিল ঘোষণা করতে হবে। চুড়ান্ত গন্তব্যে পৌছানো পর্যন্ত মাঠে ময়দানে ভূমিকা পালন করতে হবে।
বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তেমন কোনো উন্নয়নের কাজ না করলেও তারা কোনো দূর্নীতিতে অংশগ্রহণ করেননি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী অপশক্তি থাকলে বাংলাদেশ কবরস্থানে পরিণত হতো৷
আমাদের প্রত্যাশা সবার নিকট অবাধ নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদায় নেবে। তাদেরকে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় ফেলে দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের দোসররা গুজব ছড়ায়। যেসব চাপ দেওয়া হচ্ছে দেশ ও বিদেশ থেকে সামনেও দেওয়া হবে। তাদের এসব গুজব ও চক্রান্তের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা নিজেরা আইন হাতে তুলে নিবো না কিন্তু যারা গুজব ছড়ায়, ষড়যন্ত্র করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদেরকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিবো। জনগণের ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা জামায়াতের বিরুদ্ধে নিজেদের নেগেটিভ প্রচারণা শুরু করেছে।
তিনি বলেন, অতীতের স্বৈরশাসক ও তার দোসরদের ছাড় দেয়া হবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিষয়ে তিনি বলেন জীবনমান উন্নয়ন, ঘরবাড়ি মেরামত, রাস্তা ও সড়ক মেরামতে বন্যাদুর্গত নোয়াখালীতে ত্রাণ পুনর্বাসন, গৃহ নির্মাণ, যোগাযোগ উন্নয়নে আরো বেশি নজরদারি করার দাবি জানায়। জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে আহত লোকদের চিকিৎসায় আরো বেশি সহযোগিতা করা দরকার। অসংখ্য বিপ্লবের কর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাদের জন্য যা করেছেন তা প্রশংসনীয় আরো বেশি নজর দেয়া দরকার। জামায়াতে ইসলামী সর্বস্তরে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও আল্লাহর আইন কায়েমের মাধ্যমে দেশের মানুষের কল্যাণ সাধন করতে চাই।
পরে তিনি নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমীর ইসহাক খন্দকার ২০২৫-২৬ সালের জন্য জেলা আমীর হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। শপথ বাক্য পাঠ করান মাওলানা এটিএম মাসুম এবং জেলা আমীর ইসহাক খন্দকার উক্ত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ মেহমান হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কুমিল্লা মহানগরীর আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জেলা উপজেলা দায়িত্বশীলগণ।