বৈষম্যবিরোধী আন্দলনে নিহত আবদুল্লাহর বাড়িতে নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

  বেনাপোল প্রতিনিধি

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহর বাড়িতে নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বেনাপোল স্থলবন্দরে নির্মিত কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে আব্দুল্লাহর মৃত্যুর খবর পান তিনি। পরে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া গ্রামে আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান। 

এসময় তার মামা ইসরাইল সর্দার ও বড় দুই ভাই উপদেস্টার সাথে কথা বলেন। তাদের সান্তনা দেন উপদেস্টা। সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন। আব্দুল্লাহকে যেখানে দাফন করা হবে সেই কবরস্থানও ঘুরে দেখেন তিনি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ (২৩) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মারা যান তিনি। মেধাবী ছাত্র আব্দুল্লাহ যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া টার্মিনাল পাড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জব্বাবের ছেলে। মা মাবিয়া বেগম। তারা তিন ভাই ও এক বোন। আব্দুল্লাহ ছিল সবার ছোট। তিনি ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন। তিনি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। তার কপালের ঠিক মাঝ বরাবর গুলি লাগে। এমন অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে ছিলেন। প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। তবে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর তাকে বেনাপোলে নিয়ে আসেন স্বজনরা। বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ডাক্তাররা দ্রুত আবারও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। 

এদিকে আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার বাড়ি বড়আঁচড়াসহ গোটা বেনাপোলে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে তার মরদেহ আসবে বাড়িতে। আগামীকাল শুক্রবার তার নামাজে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হবে। তার কবরস্থানও ঠিক করে রাখা হয়েছে। মরদেহের সাথে তার পিতা মাতা রয়েছেন। দীর্ঘ ৩ মাসেরও বেশি সময়ে তারা ছেলের সাথেই হাসপাতালে অবস্থান করলেও ছেেেক বাঁচাতে পারেননি।