বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা অঞ্চলের ফোরশোর জায়গায় দখল করে বালু ব্যবসার অভিযোগে গভীর রাতে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শিবালয় উপজেলার দাসকান্দি এলাকায় সরকারি জায়গা ব্যবহার করে বালু বাণিজ্যের অভিযোগে গত রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বালু ব্যবসায়ী জসিম খানের চাতালে অভিযান পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) এস এম ফয়েজ উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানিক দল নদীর পাড়ে রক্ষিত একটি আনলোড মেশিন, পাইপ ও একটি এক্সকেভেটর (ভেকু) ভাঙচুর করে। বিকট শব্দে গ্রামবাসীরা ডাকাত হানা দিয়েছে মনে করে লাঠিসোটা নিয়ে এগিয়ে আসে। এক ব্যক্তি ভয়ে নদীতে লাফিয়ে পড়ে। এসময় গ্রাম্য মাদবর হিসেবে পরিচিত নূর আলী মাদবর, দেলোয়ার ও জুয়েল নামে তিন গ্রামবাসীকে আটক করা হয়।
এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই দাসকান্দি ঘাট এলাকায় রাতে দূর-দূরান্ত থেকে আগত লঞ্চ, স্টিমারসহ মালবাহী জাহাজ নোঙর করে থাকে। রবিবার গভীর রাতে ওই এলাকায় চিৎকার, চেচামেচি ও ভাঙচুরের বিকট শব্দ হলে ডাকাত পরেছে ভেবে তারা এগিয়ে আসে। এসময় অভিযানিক দল তিন গ্রামবাসীকে আটক করে। পরেরদিন থানা থেকে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
দাসকান্দি এলাকার বালু ব্যবসায়ী জসিম খান জানান, গত ১৭ নভেম্বর রাত দুইটা আড়াইটার দিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এসিল্যান্ড আমার চাতালে অভিযান চালিয়ে আমার ভেকু, আনলোড মেশিন ও পাইপ ভাঙচুর করে। এতে আমার প্রায় বিশলাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। অথচ আমার পাশেই আরিফ কাজি, তার ছোট ভাই মিলন কাজী, সাইদুর, রবিন গং, রাসেল মোল্লা, আব্দুর রাজ্জাক, রাসেল, মুনতাজ মাস্টার গং, সিরাজসহ ৮ থেকে ১০ জন বালু ব্যবসায়ী রয়েছে। আমি পৈত্রিক জায়গায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছি। এই জায়গাটি ফোরশোর কি-না সে বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তাদের ডিঙিয়ে শুধুমাত্র আমার নির্জন চাতালে অভিযান চালানো হয়। আমি নদী থেকে মাটি উত্তোলন করি না। ইজারাদারের নিকট থেকে বালু কিনে বাল্কহেডের মাধ্যমে আনলোড করি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ আরিচা নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মো. মামুনÑঅরÑরশীদ জানান, অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস এম ফয়েজ উদ্দিন বলেন, তারা গভীর রাতে বালু উত্তোলন করে। তাই গভীর রাতেই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এটা কোন উদ্দেশ্য প্রণোদিত অভিযান নয়। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ওই অভিযানে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে তিন ব্যক্তিকে আটক করা হলেও পরের দিনই তাদের জনপ্রতি ৫০০টাকা জড়িমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় বালু ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা জড়িমানা করা হয়। দশচাকার একটি ড্রাম ট্রাক পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।