কিশোরগঞ্জের শতভাগ হাওর অধ্যুষিত উপজেলা অষ্টগ্রামে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে বিষমুক্ত টমেটো। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ সবজি চাষে ঝুকছেন কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে কোটি টাকার বেশি টমেটো বিক্রি হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জমিতে সারি সারি টমেটোর গাছে ফলন ধরেছে। কৃষকেরা পরিচর্যায় ব্যস্ত। কেউ আবার বিক্রির জন্য গাছ থেকে টমেটো সংগ্রহ করছেন।
অষ্টগ্রাম সদর উপজেলার পশ্চিম অষ্টগ্রামের কৃষক লেখন মিয়া বলেন, গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে আমি লাভবান হচ্ছি। কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছেন। সরেজমিনে এসে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। শীত শুরু হওয়ার আগে থেকেই এ টমেটো বিক্রি করা শুরু করেছি। শীতেও বিক্রি করবো। বর্তমানে প্রতি কেজি টমেটো ১৫০ টাকা দরে জমি থেকেই পাইকারি বিক্রয় করছি। প্রতিবেশি অনেক কৃষক আমার জমি দেখতে আসে। তারাও এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করবেন বলে আমাকে বলে যাচ্ছেন।
অষ্টগ্রামের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, টমেটোর গ্রাফটিং পদ্ধতির জন্য আগষ্ট মাসের শুরুতে একসাথে তিত বেগুন এবং টমেটোর বীজতলা করা হয়। চারাগুলোর একমাস বয়স হলে তিত বেগুনের চারার উপরের অংশ কেটে ফেলে দেওয়া হয়। পরে টমেটোর চারার নীচের অংশ কেটে ফেলে দিয়ে তিত বেগুনের চারার নীচের অংশে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে জোড়া লাগিয়ে জমিতে রোপন করা হয়। সেপ্টেম্বর মাসে জমিতে রোপন করলে নভেম্বর মাস থেকে ফলন দেওয়া শুরু হয়ে জানুয়ারী মাস পর্যন্ত ফলন দেয় গ্রাফটিং পদ্ধতির এ গাছগুলো। রোপনের সময় প্রতিটি চারা এক ফুট দুরত্বে লাগাতে হয়। চারার প্রতিটি সারি দুই ফুট দুরত্ব বজায় রাখতে হয়। প্রতিটি গাছে ৫ থেকে ৬ কেজি টমেটোর ফলন হয়ে থাকে।
অষ্টগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার বলেন, গ্রাফটিং করা টমেটোর চাড়াগুলো মূলত মালচিং পদ্ধতিতে জমিতে রোপন করা হয়ে থাকে। এতে করে আগাছা হয়না বললেই চলে। যদিও হয় খুব সহজেই নিড়ানি দেওয়া যায়। তাছাড়া সেচ দিতে খুবই সুবিধা এ পদ্ধতির জমিতে। অষ্টগ্রামে গ্রাফটিং পদ্ধতির টমেটো চাষে শুধুমাত্র জৈবসার ব্যবহার করা হয়। এতে করে এসব টমেটো সম্পুর্ন বিষমুক্ত হয়ে থাকে। চলতি বছর অষ্টগ্রাম উপজেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে।